প্রায় ৫০ বছরের পুরনো এই ভাগাড়টি। শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, শ্রীমঙ্গল দ্য বার্ডস রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী গত ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করছে ভাগাড়টি সরাতে।
এই তিন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গত এক সপ্তাহ ধরে এই ভাগাড়ে ময়লা ফেলতে দিচ্ছে না। এ কারণে বাসা-বাড়ির বর্জ্যে পুরো শহর সয়লাব হয়ে গেছে।
অপরদিকে এর সমাধানে তিন দিন আগে শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শ্রীমঙ্গল থানার ওসি, শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, গণমাধ্যমকর্মী ও কলেজ রোডের বাসিন্দারা এক বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন ভাগাড় তৈরি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল মোতালেব বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় অপসারণ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় শিক্ষার্থীদের কেউ ছিল না।
“মৌখিক সিদ্ধান্তের কথা আমরা শুনেছি কিন্তু লিখিত কিছু পাইনি।”
এদিকে পূজা উপলক্ষে পরিবার-পরিজন নিয়ে কেনাকাটা করতে শহরমুখী হচ্ছে মানুষ। রাস্তার পাশে ময়লা থাকায় হাঁটা কিংবা গাড়ি পার্কিংয়ের পরিবেশ না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্যানেল মেয়র মীর এম এ সালাম বলেন, “আমরা জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভাগাড়ের চারদিকে টিনের বেড়া দিতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়।
“রোববার শহরবাসীর কথা চিন্তা করে আমরা শহরের কিছু কিছু জায়গা থেকে ময়লা নিয়ে রেলওয়ের একটি খাদে ফেলেছি।”
তিনি আরও বলেন, পৌর মেয়র মহসিন মিয়া দেশের বাইরে আছেন। তিনি আসলে পৌরবাসীকে নিয়ে এই সমস্যা সমাধানের জন্য পুনরায় আলোচনায় বসা হবে।
পৌর মেয়র মহসীন মিয়া মধুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এর আগে এই দাবির প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের জেটিরোড উত্তর ভাড়াউড়া এলাকায় নতুন ভাগাড় স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এরপর হাই কোর্টে রিট হলে সেখানে কাজ শুরু করা যায়নি।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় বলেন, বর্তমানে যেখানে ময়লার ভাগাড় আছে এটিও তার ইউনিয়নে, নতুনটিও তার ইউনিয়নে পড়েছে। দুই এলাকার মানুষই এটি গ্রহণ করতে চাইছে না।
“এখন এর স্থায়ী সমাধান হচ্ছে তৃতীয় কোনো স্থান নির্ধারণ। বর্তমানে যেখানে ময়লার ভাগাড়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে সেখানে দুইশ বছর ধরে লোকজন বসবাস করছে। আর যেখানে আছে সেখানেও শ্রীমঙ্গলের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকারের সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি বিবেচনা করে তৃতীয় স্থান নির্ধারণ জরুরি।