জাবিতে সাংবাদিককে মারধর, ৪ ছাত্রলীগকর্মী বহিষ্কার

‘ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায়’ এক সাংবাদিককে মারধর ও ছাত্রীকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চার শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে, যারা সবাই ছাত্রলীগ কর্মী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2018, 04:26 PM
Updated : 2 Oct 2018, 04:26 PM

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক অফিস আদেশে বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত আসে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নিবন্ধক রহিমা কানিজ।

বহিষ্কৃতরা হলেন ৪৫তম আবর্তনের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শুভাশীষ ঘোষ এবং ৪৭তম আবর্তনের লোক প্রশাসন বিভাগের তিন শিক্ষার্থী ইয়া রাফিউ শিকদার, মোস্তাফিজুর রহমান ও সোহেল রানা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপাচার্য তার নির্বাহী ক্ষমতাবলে এ বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি অধিকতর তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে পনেরো কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।”

সাময়িক বহিষ্কারাদেশ চলাকালে তারা ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে এবং হলে থাকতে পারবেন না বলে প্রক্টর জানান। 

তবে এ বহিষ্কারাদেশকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করেছেন মারধরের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হক সোহাগ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমাকে ও আমার বান্ধবীকে ছাত্রলীগের এক সিনিয়র কর্মীর নেতৃত্বে সাত-আটজন মিলে মেরেছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের চাপের মুখে হোতাদের বাদ দিয়ে চারজনকে বহিষ্কারের আইওয়াশ করেছে।”

এ অভিযোগ অস্বীকার করে প্রক্টর জুলকারনাইন বলেন, “আমরা প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক তদন্ত শেষে সাতজনের নাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঠাই। ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় উপাচার্য নিজ ক্ষমতাবলে তার মধ্য থেকে চারজনকে সাময়িক বহিষ্কার করেন।”

গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুল এলাকায় দুই বহিরাগতকে মারধর করে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দিলে মাহমুদুল হক সোহাগকে মারধর করে একদল যুবক। এ সময় তাকে বাঁচাতে এলে তার এক সহপাঠীও মারধরের শিকার হন। পরে সোহাগ  এবং ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ দেন। সে অভিযোগের ভিত্তিতেই এ বহিষ্কারাদেশ এসেছে।

ছাত্রলীগ কর্মী বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চল সাংবাদিকদের বলেন, “তারা ছাত্রলীগের কোনো পদে ছিল না। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ানোয় তারা শাস্তি পেয়েছে। তারা দলীয় কোনো পদে না থাকায় কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। তারা যাতে সংগঠনের কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে না পারে সে বিষয়টি খেয়াল রাখা হবে।”