নির্বাচনে না এলে বিএনপির নিবন্ধন ঝুঁকিতে: সিইসি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়বে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।  

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2018, 03:54 PM
Updated : 28 Sept 2018, 10:14 AM

বৃহস্পতিবার বগুড়ায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দল যদি একটি আসনেও নির্বাচন না করে, তাহলে নিবন্ধন আইন অনুযায়ী তাদের নিবন্ধন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। তবে আরও অনেকগুলো ক্রাইটেরিয়া থেকে যায়।”

নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন কোনো উদ্যোগ নেবে কিনা প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, “আমরা নির্বাচনকে কীভাবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করছি। এর বাইরে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আমাদের আলোচনা করা কিংবা বসা সম্ভব নয়। এটা তাদের স্বাধীনতা। তবে আমরা সব দলের অংশগ্রহণ কামনা করি।”

বিএনপি নির্বাচনে আসবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা বলেন, “অংশগ্রহণমুলক, প্রতিযোগিতামূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। আমি আশা করি তারা নির্বাচনে আসবে।”

বিএনপি নির্বাচনে না এলে নিবন্ধন বাতিল হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যদি তারা একটি আসনেও নির্বাচন না করে তাহলে তো ঝুঁকি থেকেই যায়।”

ইভিএম নিয়েও কথা বলেন সিইসি নূরুল হুদা।

নির্বাচন কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনে সীমিত আকারে হলেও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করতে চায় বলে জানিয়েছেন তিনি।

“ইভিএম ব্যবহারের জন্য আরপিও সংশোধন করা প্রয়োজন। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেটি পাশ হলে সীমিত আকারে ব্যবহারের চেষ্টা করা হবে।”

সনাতনী ভোট গ্রহণ পদ্ধতির নানা অসুবিধার কথা উল্লেখ করে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, “বৃটিশ আমল থেকে চলে আসা পেপার ভোটিংয়ে অনেক সমস্যা। পক্ষান্তরে ইভিএম এমন একটা পদ্ধতি যাতে আমরা কনভিন্সড। আমাদের ইচ্ছা এবং স্বপ্ন হলো ইভিএম ব্যবহার করা।” 

ইভিএমের ব্যবহারের বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইভিএমের অনেক সুবিধা। যেমন নির্ধারিত সময়ের আগে-পরে কেউ ভোট দিতে পারবে না। এক কেন্দ্রের সব ভোটারদের তথ্য সেখানে সংরক্ষিত থাকবে। ফলে অন্য কেন্দ্রের কোনো ভোটার সেখানে ভোট দিতে পারবে না।

“টেকনোলজির দিক দিয়ে পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেছে; কিন্তু আমরা নির্বাচনের ক্ষেত্রে সেই টেকনোলজিটা ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা ইভিএমকে জনগণের সামনে নিতে পারিনি।”

ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্য সম্পর্কে কে এম নূরুল হুদা বলেন, “আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা ইভিএম এর ব্যবহার নিয়ে একটা প্রদর্শনীর আয়োজন করব। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে ডাকা হবে। তখন হয়ত তাদের আস্থা বাড়বে।”

এছাড়া অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সারাদেশে যে উন্নয়ন মেলা হবে সেখানেও নির্বাচন কমিশনের স্টল থাকবে এবং ইভিএম মেশিনের ব্যবহার সম্পর্কেও জনগণকে ধারণা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়।