তাই বুধবার নিজ বিভাগের সভাপতির কক্ষে বসে তাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে।
তরিকুলের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করে কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাননি তিনি।
তরিকুল ইসলাম তারেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সুন্দরখোল উত্তরপাড়া গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন।
চলতি বছরের ২ জুলাই পুলিশের উপস্থিতিতে কোটা আন্দোলনকারীদের পতাকা মিছিলে হামলা চালায় একদল ছাত্র, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকতর্মীদের দেখা যায়। তাদের হাতুড়িপেটায় তরিকুলের পা ভেঙে যায়। পরে তিনি রাজশাহী থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যান। হামলার প্রায় তিন মাস পরও তিনি এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। তরিকুলের উপর হামলার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। কাওকে আটকও করেনি পুলিশ।
তরিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে পরীক্ষা দিলাম। অনেক কষ্ট হলো। চার ঘণ্টার পরীক্ষার তিন ঘণ্টার একটু বেশি সময় দিয়েছি।”
তরিকুল বলেন, “অসুস্থ শরীর নিয়েই সোমবার চিকিৎসাকেন্দ্রে গিয়ে সিক বেডে পরীক্ষা দেওয়ার আবেদন করি। চিকিৎসকেরা আমার অবস্থা বিবেচনা নিয়ে আবেদন অনুমোদন করেন। এরপর আবেদনটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে জমা দিই। পরে সেখান থেকে আবেদনটি উপাচার্য দপ্তরে যায়।”
তরিকুলের অভিযোগ, পরীক্ষার আগের দিন মঙ্গলবার জানতে পারি উপাচার্য স্যার আমার আবেদনটি গ্রহণ করেননি। তাই আজকে আমাকে এভাবে কষ্ট করেই পরীক্ষা দিতে হলো।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক বাবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তরিকুল আবেদন করেছিল। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী তিনি সেই সুবিধা পাননি।”
তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সংক্রামক ব্যাধি হলে শিক্ষার্থীকে মেডিকেল সেন্টারে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। আর যদি সংক্রামিত ব্যাধি না হয়, তবে বিভাগে এসেই পরীক্ষা দিতে হবে। তরিকুলের পক্ষে যারা আবেদন নিয়ে এসেছিল, তাদের সবাইকে সেটা বলা হয়েছে।
শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তরিকুল বলেন, “এখনও ঠিকভাবে মাটিতে পা মেলাতে পারি না। মাঝে মাঝে পুঁজ, রক্ত বের হয়। পরীক্ষা দিতে খুব কষ্ট হয়েছে। চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা আমার অবস্থা বিবেচনা করে আবেদন অনুমোদন করেছিল। কিন্তু শেষে আর তা হলো না।”
বিভাগের সভাপতি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, “তরিকুল আমার কক্ষে বসে পরীক্ষা দিয়েছে। তার সুবিধার্থে সিক বেডেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে বাকি পরীক্ষাগুলোও দেবে আশা করি।”
এ ব্যাপারে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে উপাচার্য এম আবদুস সোবহানকে ফোন করে পাওয়া যায়নি।