স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘নর্থস এগ’ নামের এই খামারটির কারণে আশপাশের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু খামার কর্তৃপক্ষ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির নির্দেশনাও মানছে না।
খামার কর্তৃপক্ষ তাদের গাফিলতির কথা স্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার সদর উপজেলার ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, খামারের পেছনে উন্মুক্ত জায়গায় বিষ্ঠা ফেলে রাখা হয়। দেয়ালের পাশে ফসলি জমি। তার পাশে জনবসতি।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. নাসিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষ্ঠার দুর্গন্ধে থাকা যায় না। রোদ উঠলে বাতাসে গন্ধ আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে। মাছির উৎপাতে খাওয়া-দওয়া করা যায় না। শীত এলে মাছির উৎপাত আরও বাড়ে। তখন মশারির ভেতর খাবার নিয়ে বসতে হয়।”
একই গ্রামের বিউটি বেগম বলেন, “গন্ধে বমি আসে। দুর্গন্ধের কারণে আত্মীয়-স্বজন বাড়ি আসতে চায় না।”
খামারের আশপাশের প্রায় ১০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আট-দশ বছর ধরে দুর্গন্ধে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দৌলতপুর এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার আলোচনা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা।”
খামারের অপরিশোধিত পানি গিয়ে আশপাশের খেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. তৈমুর রহমান বলেন, “উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় খামার কর্তৃপক্ষকে ডেকে আনা হয়েছিল। তারা বিষ্ঠার দুর্গন্ধ নিরসনে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। এরপর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও সমস্যা সমাধানে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খামারের আশপাশের রাস্তায় চলতে হয় নাকমুখ চেপে। মুরগির বিষ্ঠার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধ ও মাছির উৎপাতে খামারের চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে।
জেলার সিভিল সার্জন আবু মো. খয়রুল কবীর বলেন, “মুরগির বর্জ্যের কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে ফুসফুসের রোগের কারণ হতে পারে।
“এ থেকে শ্বাসকষ্ট ও হার্টের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এসব খামার সংলগ্ন এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে।”
এ বিষয়ে নর্থস এগ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক ফেরদৌস আলম মহসিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষ্ঠা থেকে সার উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সার কারখানাটি চালু হলে আর গন্ধ থাকবে না।”
তবে কবে নাগাদ সেটা চালু হবে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি।