ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে ভোলায়

মৌসুমের একেবারে শেষ সময়ে এসে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে।

আহাদ চৌধুরী তুহিন ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2018, 05:00 PM
Updated : 25 Sept 2018, 05:50 AM

ভোলার বিভিন্ন মাছঘাট ঘুরে জেলে ও মাছ ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভরা মৌসুমেও উপকূলীয় দ্বীপ জেলার নদ-নদীতে ইলিশের দেখা পাওয়া যায়নি। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে।

কদিন আগেও যেসকল মাছ ঘাটগুলোতে ছিল সুনসান নীরবতা এখন সেখানে আড়তদার আর পাইকারের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

কিছুক্ষণ পরপরই মাছধরা ট্রলার বোঝাই ইলিশ নিয়ে সাগর ও নদী থেকে মাছঘাটে ফিরছে জেলেরা। ঘাটে নৌকা অথবা ট্রলার ভিড়ানোর সাথে সাথেই হাঁকডাক দিতে থাকেন ব্যাপারীরা। জেলেরা ঝুড়িতে করে বিভিন্ন আকারের ইলিশ নির্দিষ্ট গোলায় রাখেন। মুহূর্তের মধ্যেই সেই ইলিশ কিনতে নিলামে ডাক উঠে যায়।

প্রতিদিন এভাবেই জেলা সদরের বঙ্গেরচর থেকে চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ও মনপুরা পর্যন্ত শতাধিক মাছঘাট থেকে প্রতিদিন ৪/৫ কোটি টাকার ইলিশ মাছ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য।

সদর উপজেলার তুলাতলী মাছঘাটে জেলে খোরশেদ আলম বলেন, চলতি মৌসুমে গত ৬ মাস নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। গত দুসপ্তাহ ধরে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে।

ইউসুফ নামের আরেক জেলে বলেন, “ভরা মৌসুমে বেশি মাছ ধরার আশায় ধারদেনা করে মাছ ধরতে নেমেছিলাম।”

তুলাতলী মাছঘাটের আড়ৎদার বজলু বেপারী বলেন, ১০ দিন আগেও একজন জেলে প্রতিদিন মাত্র ২/৩ হাজার টাকার মাছ পেত। আর এখন একজন জেলে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার টাকার মাছ পাচ্ছে। দামও আগের চেয়ে কম।

৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২২০০ টাকায়। আর জাটকার হালি দেড়শ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান হেলাল উদ্দিন নামের আরেক আড়ৎদার।

এ বিষয়ে ভোলা জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি এরশাদ বলেন, প্রতিদিন জেলার চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ থেকে বঙ্গেরচর পর্যন্ত শতাধিক মাছঘাটের প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ইলিশ মাছ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে যাচ্ছে।

ভোলা সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, এ বছর ইলিশের প্রাপ্তিটা একটু শেষ

দিকে হয়েছে।

“দেরিতে হলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেরাও খুশি আমরাও খুশি।”

তিনি আরও জানান, গত অর্থ বছরে ভোলায় ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লক্ষ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। আর সে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছে ১ লক্ষ ২৯ হাজার মেট্রিক টন।

কিন্তু এবছর উৎপাদন লক্ষমাত্রা ১ লক্ষ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধরা হলেও সে লক্ষমাত্রা পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।

মা ইলিশ রক্ষায় আগামী ৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য নদীতে সব ধরনের মাছধরা বন্ধ থাকবে।