মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন, মঙ্গলাচরণ, গুরুবন্দনাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচারের মধ্য দিয়ে রোববার রাতে এ অনুষ্ঠান হয়।
আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক ফণীভূষণ পাল বলেন, “এটা এ আশ্রমের ৪৯৪তম উৎসব।
“জাতিভেদ, কুসংস্কার, অনাচারসহ নানা রকম নির্যাতনে মানুষ যখন অতিষ্ঠ হয়েছিল, সে সময় গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুর সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার কেড়াগাছি গ্রামে জন্ম নেন। তিনি পদ রচনা করে, প্রচার চালিয়ে, জনসচেতনতা সৃষ্টি করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। সমস্যা থেকে মুক্তি বা নির্বাণ লাভের আশায় মানুষের অন্তরে মুক্তির আলো জ্বালার চেষ্টা করেন তিনি।”
তার স্মৃতিবিজড়িত এলাকায় ভক্তরা পাটবাড়ী আশ্রম গড়ে তোলেন বলে ফণীভূষণ জানান।
উৎসবে থাকে হরিদাস ঠাকুরের জীবনী আলোচনা, ভাগবত আলোচনা, কীর্তন, ভক্তিগীতি ও পদাবলি কীর্তন প্রভৃতি।
ফণীভূষণ বলেন, উৎসবটি ভক্ত-অনুরাগীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। বাংলাদেশের অন্যতম হিন্দুতীর্থস্থান পাঠবাড়ি আশ্রম। দেশ-বিদেশ থেকে আসা হাজারো ভক্তের আগমনে মুখরিত হয় প্রতি বছর। কালের আবর্তে আশ্রমটি হয়ে উঠেছে একটি দর্শনীয় স্থান।
“এখানে প্রায় ৬০০ বছরের মাধবীলতা আর সুপ্রাচীন তমাল বৃক্ষ রয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী এ আশ্রমে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান জাঁকজমকভাবে পালিত হয়। দেশের ৬৪ জেলা, বিভাগীয় শহর ও ভারতসহ অন্যান্য দেশের হাজার হাজার ভক্ত-অনুরাগী এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।”
আশ্রমের প্রচার সম্পাদক আনন্দ দেবনাথ বলেন, এখানে একটি জাদুঘর ও মাটির নিচে রয়েছে গিরিগোবর্ধন মন্দির। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশ-বিদেশ থেকে শত শত দর্শনার্থী দেখতে আসেন।
তারা প্রতিবছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
আশ্রমের সভাপতি তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, আশ্রমের পক্ষ থেকে দেশ-বিদেশ থেকে আসা সব ভক্ত বা দর্শনার্থীদের এখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করে থাকে।
“এখানে হিন্দু-মুসলমান কোনো ভেদাভেদ থাকে না। সব ধর্মের মানুষের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি মুখরিত হয়ে ওঠে।”
বেনাপোল বন্দর থানার এসআই শরীফ হাবিবুর রহমান বলেন, উৎসবে আগত ভক্তদের নিরাপত্তায় সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করছেন হিন্দু ধর্মালম্বী লোকজন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যেকোনো ঘটনা মোকাবিলায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে।