‘আইসিটিতে ৩ লাখ কর্মসংস্থান হবে’

আগামী তিন বছরে দেশের আইসিটি খাতে বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2018, 03:47 PM
Updated : 23 Sept 2018, 08:57 PM

রোববার দুপুরে নগরীর নবীনগরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক প্রকল্পের আওতায় ১০ তলাবিশিষ্ট সিলিকন টাওয়ার, বাউন্ডারি ওয়াল ও সাব স্টেশন এবং ডিপ টিউবয়েল ও রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কসহ ২৮টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ২৮টি পার্কের কাজ শেষ হলে সরাসরি তিন লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আর পরোক্ষভাবে প্রায় ২০ লাখ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে।

বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের আশপাশের এলাকার মানুষদের এখানে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে; যাদের প্রযুক্তিগত যোগ্যতা আছে তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ পাবে বলে জানান মেয়র।

লিটন বলেন, “উন্নয়নের অগ্রাযাত্রা অব্যাহত রাখতে আবার শেখ হাসিনা সরকার দরকার; এই কথাটি আমরা সবাই মিলে চারদিকে ছড়িয়ে দেব, আর আমাদের যার যেখানে আত্মীয়-স্বজন আছে তাদেরসহ সাধারণ মানুষের মাঝে সবাইকে ছড়িয়ে দিতে হবে।”

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, শুধু ঢাকা, গাজীপুরে হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে না, ঢাকার বাইরে যে ২৮টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে সেগুলোতে আগামী তিন বছরে তিন লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে, রাজশাহীতে হবে ১৪ হাজার জনের।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশে ৯ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, ১০ কোটি মানুষের কাছে মোবাইল পকেটে পকেটে আছে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিকভাবে একটা বড় পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।

“বাংলাদেশ শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে মেধানির্ভর অর্থনীতির দিকে যাচ্ছে। তারুণ্যের অফুরান শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে আমরা হার্ডওয়ার, সফ্টওয়ার, সার্ভিস-এই পুরো সেক্টরকে গড়ে তুলতে চাই।”

প্রতি বছর বাংলাদেশে চার কোটি মোবাইল ফোন ও ৫ লাখ ল্যাপটপ আমদানি করতে হয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এই বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ডিভাইস যদি আমরা রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কসহ ২৮টি হাইটেক পার্কে তৈরি করতে পারি, তাহলে ভেবে দেখুন, কত হাজার কোটি বাংলাদেশর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

“আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আগামী ২০২১ সাল নাগাদ আইসিটি সেক্টরে ২০ লক্ষ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব।”

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের, রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাসুদ রহমান ভূঞা, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক প্রকল্পের পরিচালক একেএম ফজলুল হক প্রমুখ।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আলোচনার আগে ১০ তলা বিশিষ্ট সিলিকন টাওয়ার, বাউন্ডারি ওয়াল ও সাব স্টেশন এবং ডিপ টিউবয়েল ও রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং নির্মাণ কাজের ফলক উন্মোচন করেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ অতিথিরা।

অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন, জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রানা প্রমুখ।

‘ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নয় কোটি’

আওয়ামী লীগ সরকারের নয় বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নয় লাখ থেকে নয় কোটিতে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক, রাজশাহীর আওতায় রোববার সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এআর, ভিআর, এমআর ল্যাব উদ্বোধন পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারে সকাল নয়টায় প্রতিমন্ত্রী এ ল্যাব উদ্বোধন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ আলোচনা সভায় পলক বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তরুণদের জন্য যে ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছেন তা কাজে লাগাতে হবে। আমরা তরুণদের জন্য প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছি। যে নয় লক্ষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল আমাদের সময়ে তা নয় কোটিতে পরিণত হয়েছে।”

দেশের জনগণের ৬৮ ভাগই তরুণ এবং বাংলাদেশে তারুণ্যের যে শক্তি রয়েছে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে তা নেই বলে মনে করেন পলক।

বাংলাদেশ এর আগে বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের সুযোগ হারিয়েছিল উল্লেখ করে পলক বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা করেছে। এছাড়াও সারাদেশে ৪০ হাজার মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। অনলাইন মার্কেট প্লেসের দিক থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে।

“কাজের গতিকে বৃদ্ধি এবং সময় অপচয় রোধের জন্য সারাদেশে ৫ হাজার ২৭২টি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার ন্থাপন করা হয়েছে। সারাদেশে ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হয়েছে।”

২০২১ সালের মধ্যে দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য বিদেশে রপ্তানি করে সরকার পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয় করবে বলে আশা করছে, বলেন পলক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক খাদেমুল ইসলাম মোল্যা, উপ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া।

অন্যান্যের মধ্যে ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাক, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রফিকুল ইসলাম, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম. ওসমান গনি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর লুৎফর রহমান, রাজশাহী মহানগর ও রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।