গোপালগঞ্জে প্রভাবশালীর দেয়ালে অবরুদ্ধ ৮ পরিবার

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় প্রভাবশালীর তোলা দেয়ালে অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে আটটি পরিবার। প্রতিদিন মই দিয়ে এই পরিবারগুলোর সদস্যদের দেয়াল টপকে আসা-যাওয়া করতে হয়।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2018, 05:16 PM
Updated : 22 Sept 2018, 05:16 PM

উপজেলার নয়াকান্দি গ্রামের এই পরিবারগুলোর অভিযোগ, পাশের করফা গ্রামের নূর ইসলাম শেখ দুই মাস আগে পাচিল তুলে তাদের অবরুদ্ধ করে নামমাত্র দামে বাড়িঘর বেচার জন্য চাপ দিচ্ছেন।

ভুক্তভোগীরা হচ্ছে বিধবা চিপমনি বিশ্বাস, আরতি বিশ্বাস, সুবোধ সমাদ্দার, সুখরঞ্জন জয়ধর, খগেন বিশ্বাস, শান্তি জয়ধর, আক্কাস শেখ ও শাজাহান ব্যাপারীর পরিবার।

শাজাহান বলেন, “আমাদের বাড়িঘর পানির দামে কিনে নিতেই এই দুর্ভোগের ফাঁদ পেতেছেন নূর ইসলাম।”

এসব পরিবারের স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ সবাইকে মই দিয়ে দেয়াল টপকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।

এছাড়া মামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না বলেও অভিযোগ।

আলোমতি বিশ্বাস নামে এক বিধবাসহ অনেকে অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় তরুর বাজারের অনেক দোকানপাটও নূর ইসলাম শেখ দখল করে নিয়েছেন।

আলোমতি বলেন, “তরুর বাজারে আমাদের একটি দোকান ঘর ছিল। এই দোকানে আমার ছেলে মুদি ব্যবসা করত; যা আয় হত তা দিয়ে আমাদের সংসার চলত। ঘরটি নূরুল ইসলাম শেখ ভেঙ্গে দিয়ে জায়গা দখলে নিয়েছেন। ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আমাদের খেয়ে-না-খেয়ে দিন কাটে।”

এলাকাবাসী তাদের চলাচলের পথ অবমুক্ত করার পাশাপাশি নূর ইসলাম শেখের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

এলাকায় না থাকায় নূর ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।

তবে তার ভাই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, “তারা মই বেয়ে পাচিল পার হচ্ছেন। এতে আমরা বাধা দিচ্ছি না। পায়ে হাঁটা পথ আমাদের জায়গার মধ্যে পড়েছে। তাই বন্ধ করে দিয়েছি।”

অন্যের জায়গা দখল সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমার ভাই নূর ইসলাম শেখের বিরুদ্ধে আনা জমি দখলের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

“আমরা কারও জমি দখল করিনি। জমি ও দোকান ঘরের জায়গা আমার ভাই ক্রয় করেছে। তিনি তার জায়গায় পাচিল তুলেছেন।”

কান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম মাহফুজুর রহমান বলেন, “জনসাধারণের চলাচলের পথ বন্ধ করার কোনো বিধান নেই।

“তাদের চলাচলের পথ অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে। বিষয়টি আমি অবগত হয়ে প্রয়োজনে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”