গাইবান্ধায় ঘোষণা ছাড়া পরিবহন ধমঘট, দুর্ভোগে যাত্রী

পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ গাইবান্ধায় পরিবহন ধমঘট শুরু করায় দুর্ভোগে পড়েছে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা।

তাজুল ইসলাম রেজা গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2018, 12:56 PM
Updated : 16 Sept 2018, 12:57 PM

রোববার সকাল থেকে জেলা শহর থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি।

জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, প্রস্তাবিত সড়ক নিরাপত্তা আইনে জরিমানা ও সাজার বিধান সংশোধনের দাবিতে চালকরা গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন।

“এছাড়া গাড়ি চালকরা নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন। তাই প্রথমে দিনাজপুর জেলায় এই কর্মসূচি শুরু হয়। পরে গাইবান্ধা ও রংপুরসহ উত্তরের কয়েকটি জেলায় পালিত হচ্ছে।”

দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

বেলা ১১টায় গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় যাত্রীদের দুর্ভোগের চিত্র। সারিবদ্ধভাবে বাস দাঁড় করে রাখা হয়েছে। কোথঅও চালক বা সহকারীরা নেই। ব্যাগ ও মালপত্র হাতে যাত্রীরা ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ কেউ বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন, কেউ কেউ বাস আসবে এই আশায় টার্মিনালে বসে আছেন।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি গ্রামের ব্যবসায়ী আমিনুল হক বলেন, “বগুড়ায় আমার মেয়ের বাড়ি। সে খুব অসুস্থ। তাই পরিবার নিয়ে সেখানে যেতে সকাল ১১টায় টার্মিনালে আসলাম। এসে দেখি বাস বন্ধ। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।”

পার্শ্ববর্তী কালির বাজার গ্রামের গৃহবধূ জোসনা বেগম বলেন, “রংপুর মেডিকেলে আমার অসুস্থ স্বামী ভর্তি আছে। গকতাল শনিবার বাড়িতে টাকা নিতে এসেছিলাম। আজ রংপুরে যাবার জন্য বাস ধরতে আসলাম। এসে দেখি কোনো বাস যাচ্ছে না। তাই বসে আছি, যদি বাস ছাড়ে; আমাকে যেতেই হবে।”

দুপুর ১টায় নাটোরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাস টার্মিনালে যান গাইবান্ধা নাগরিক পরিষদের আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, এমনিতেই ধর্মঘট মানে দুর্ভোগ। উপরন্তু হঠাৎ পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে জনগণের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। না জেনে বাসটার্মিনালে গিয়ে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন।         

এ বছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের উপর জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস উঠে পড়লে ঘটনাস্থলেই নিহত হন শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম ওরফে রাজীব এবং একই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম।

এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এরপরই সড়ক নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।