রূপগঞ্জে নিহতদের ‘ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল’, বলছে পরিবার

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে, যাদের দুদিন আগে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2018, 09:59 AM
Updated : 14 Sept 2018, 10:34 AM

পুলিশ বলছে, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে পূর্বাচল উপ-শহরের আলমপুর এলাকার ১১ নম্বর ব্রিজ এলাকা থেকে ওই তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তদের গ্রেপ্তার বা আটকের কোনো তথ্য রূপগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে নেই।

নিহতরা হলেন- ঢাকার মহাখালী এলাকার শহীদুল্লাহর ছেলে মো. সোহাগ (৩২), মুগদা এলাকার মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে শিমুল এবং একই এলাকার আবদুল ওয়াহাব মিয়ার ছেলে নূর হোসেন বাবু (৩০)।

এর মধ্যে সোহাগ ও শিমুল পরস্পরের বন্ধু, আর শিমুল ও বাবু সম্পর্কে ভায়রা ভাই।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সড়কের পাশে তিন যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকার লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ লাশগুলো মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।”

রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিন যুবকের পরনে ছিল প্যান্ট, শার্ট ও গেঞ্জি। দেখে মনে হয়েছে অন্য কোথাও হত্যার পর লাশগুলো এখানে ফেলে যাওয়া হয়েছে।”

নিহতদের পরিচয় পুলিশ সকালে জানাতে না পারলেও পরে পরিবারের সদস্যরা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে এসে লাশ শনাক্ত করেন।

এর মধ্যে সোহাগের লাশ শনাক্ত করেন তার ভাই মো. শাওন। তিনি জানান, সোহাগ ঢাকার মহাখালী এলাকায় স্যাটেলাইট কেবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা করার পাশাপাশি ফাস্ট ফুডের দোকান চালাতেন।

আর বাকি দুজনের লাশ শনাক্ত করেন শিমুলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার আন্নি। তিনি বলছেন, তার স্বামী ‘ছোটখাটো ব্যবসা’ করতেন। তাদের একটি মেয়ে রয়েছে।

শাওন হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, গত বুধবার থেকে সোহাগের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না তারা। সকালে ফেইসবুকে লাশ উদ্ধারের খবর আর ছবি দেখে তারা নারায়ণগঞ্জে ছুটে আসেন।

আর আন্নি বলেন,বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন তার স্বামী।পথে দৌলতদিয়া ঘাটে একটি বাস থেকে তাদের ‘ডিবি পুলিশ পরিচয়ে’ ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তারপর থেকে শিমুলের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি তারা।

পরিবারের এই অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেখানে জেলা পুলিশের কোনো অভিয়ান চালানো হয়নি। অন্য কোনো বাহিনী তাদের আটক করেছিল কি না, সে তথ্য আমাদের কাছে নেই।”

স্বজনরা এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান ওসি।

নিহতদের পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ভাষ্য  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।