পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এমএম মোর্শেদ এ আদেশ দেন বলে জানান এই আদালতের পিপি অনুপ নন্দী।
এছাড়া এ মামলায় ওই বাসের মালিক ও চালকের জামিন বাতিল করেছে একই আদালত।
গত সোমবার এই আদালতই বাস চালক মহিদ মিয়া ওরফে খোকন ও বাস মালিক জয়নাল আবেদীনকে জামিন দিয়েছিল।
সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের সময় সড়ক দুর্ঘটনায় হত্যার ধারা ৩০২ যুক্ত করার দাবি তোলা হয়। আগেও বিভিন্ন সময় এ ব্যাপারে দাবি উঠেছিল। এবার ব্যাপক আন্দোলনে সরকারের পক্ষ থেকে তা মেনে নেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও গেজেট না হওয়ার কথা বলে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ আগে এ ধারা মামলায় রাখেনি।
পিপি অনুপ নন্দী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ এ মামলায় হত্যার ধারা যুক্ত করতে এবং একদিন আগে দেওয়া দুইজনের জামিন বাতিলের আবেদন করেন আদালতে।
“শুনানি শেষে আদালত এ মামলায় হত্যার ধারা ৩০২ যুক্ত এবং বাস চালক ও মালিকের জামিন বাতিলের আদেশ দেন।”
গত ২৮ অগাস্ট কুষ্টিয়া শহরতলীর চৌড়হাস মোড়ে একটি বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায় শিশু আকিফা। দুদিন পর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। আকিফা চৌড়হাস একালাকার হারুনর রশিদ ও রিনা বেগমের মেয়ে।
এ ঘটনায় ৩০ অগাস্ট আকিফার বাবা হারুনর রশীদ বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় তিনজনের নামে মামলা করেন।
আসামিরা হলেন ফরিপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা বাস চালক মহিদ মিয়া ওরফে খোকন, চালকের সহকারী ইউনুস মাস্টার ও বাস মালিক জয়নাল আবেদীন।
গত রোববার ফরিদপুর থেকে জয়নাল আবেদীনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সোমবার জয়নাল আবেদীনকে আদালতে হাজির করে। একই সময় বাসের চালক মহিদ মিয়া ওরফে খোকন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের আবেদন মঞ্জুর করে।
এ বিষয়ে সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এর আগে আকিফার বাবা হারুনর রশিদের করা এ মামলায় দণ্ডবিধি ৩০২ ধারা যুক্ত না করার বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, তিনজনের নামে মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির বাবা। দণ্ডবিধির ২৭৯/৩৩৮(ক), ৩০৪(খ) ধারায় মামলা করা হয়।
দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা না নেওয়ার বিষয়ে ওসি বলেন, “যেহেতু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আমলে নিয়ে ৩০২ ধারায় মামলা রজ্জুর বিষয়টি এখনও গেজেটভুক্ত হয়নি সেকারণে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা নেওয়া হয়নি।”
গত ২৮ অগাস্ট দুপুরে চৌড়হাস মোড়ে একটি বাস দাঁড়িয়ে ছিল। ওই সময় আকিফাকে কোলে নিয়ে তারা মা রিনা বেগম বাসটির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখনই বাসটি চলতে শুরু করে এবং রিনা বেগমকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে আফিফা পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়।
আহত মা-মেয়েকে উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে তার মাসহ সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন শিশু আকিফা বৃহস্পতিবার ভোরে মারা যায়।