ওই ভবনের জমি ভরাটের জন্য গত ১৫ অগাস্ট থেকে টাঙ্গন নদীর সেতুর শ খানেক ফুট উত্তরে তীর সংরক্ষণ বাঁধের পাশে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে।
রোববার সকালে টাঙ্গন নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, শহরের জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের পাশে গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঠাকুরগাঁও জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়টি নির্মাণের কাজ চলছে।
ঠাকুরগাঁও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আল মামুন হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয় নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঢাকার ‘শিকদার কনস্ট্রাকশনস’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গণপূর্ত বিভাগের চুক্তি হয়। এক মাস আগে ঠিকাদারের লোকজন ভবনের কাজ শুরু করেন।
নদী থেকে বালু তুলতে হলে অনুমতি নিতে হয় জানিয়ে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “টাঙ্গন নদী থেকে বালু তোলার জন্য ওই ঠিকাদার আমাদের অনুমতি নেয়নি। বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব আমরা।”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রকৌশলী আল মামুন হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঠিকাদার কোথা থেকে মাটি এনে জমি ভরাট করলেন, তা আমাদের দেখার বিষয় নয়। তবে অন্য কোনো স্থাপনার যেন ক্ষতি না হয় সেটা দেখা হবে।”
ঘটনাস্থলে বালু তোলার কাজে থাকা শিকদার কনস্ট্রাকশনের শ্রমিক আব্দুল হক বলেন, “ঠিকাদারের লোকজন আমাদের বালু তুলতে বলেছেন। আমরাও তাদের কথামত কাজ করছি। কাজ শেষ হতে আরও সপ্তাহ খানেক লাগবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু বালু তোলা হলে ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে নদীর ওপরের সেতু, তীর সংরক্ষণ বাঁধ ও আশপাশের স্থাপনা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার জহির ইসলাম বলেন, “ঠিকাদার জমি ভরাটের খরচ সাশ্রয় করার জন্য টাঙ্গন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে প্রকল্পের জমি ভরাট করছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে নদীর ওপরের সেতু, নদীর তীরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের ক্ষতি হতে পারে।”
একই এলাকার জয়নাল আবেদিন বলেন, “নদীর তীর ঘেঁষে খননযন্ত্র দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলা হলে নদীর সেতু, তীর সংরক্ষণ বাঁধসহ আশপাশের স্থাপনা ধসে পড়তে পারে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিকদার কনস্ট্রাকশনসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার জানা মতে নদী থেকে বালু তোলা হলে আশেপাশের স্থাপনার কোনো ক্ষতি হবে না।”
বালু তোলার জন্য অনুমতি কেন নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি তিনি।