আলোচনায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ শেরপুর জেলার সভানেত্রী জয়শ্রী দাস লক্ষ্মী বলেন, “নারীর কোনো বাড়ি নেই। জন্মের পর বাবার বাড়ি, বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি, বৃদ্ধ বয়সে ছেলের বাড়ি। আমরা নারীর এমন পরিচয় চাই না। আমরা চাই নারী তার নিজের নামে, নিজের কর্মে পরিচিত হবে।
“এজন্য নারীকে সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার দিতে হবে। সংগ্রাম ছাড়া কোনো অধিকার আদায় হয় না। আমাদের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার আদায় করতে হলে আন্দোলন করার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
জেলা শহরের নিউমার্কেটে সাংবাদিক বিপ্লবী রবি নিয়োগী সভাকক্ষে শুক্রবার বিকালে এ সভা হয়। সভার আয়োজন করে হিন্দু সম্পত্তিতে নারী অধিকার বাস্তবায়ন কেন্দ্রীয় কমিটি।
“এজন্য রাষ্ট্রকে প্রায়াজনীয় আইন তৈরি করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোরও সদিচ্ছা থাকতে হবে। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ দাবি আরও বেগবান করে তুলতে হবে।”
দাবিটি রাজনৈতিক দলগুলোকে আসন্ন নির্বাচনে তাদের ইশতেহারে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা শহরের শহীদ আবদুর রশিদ মেমোরিয়াল একাডেমি স্কুলের সহকারী শিক্ষক সম্পা দত্ত বলেন, “বলা হয় ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। তাহলে কেন উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয়? এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে নারী-পুরুষ সকল ক্ষেত্রে সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমি ভাইয়ের মত বাবার সম্পত্তিতে আমার অধিকার চাই।”
পঞ্চমী দেব রুমা নামে একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী বলেন, “বাবার সম্পত্তিতে আমার কেন অধিকার থাকবে না? একই বাবা-মায়ের সন্তান যদি ছেলে-মেয়ে দুজনই হয়, তাহলে কেন বাবার সম্পত্তি থেকে মেয়েকে বঞ্চিত করা হবে?
“আমরা এমন প্রথার পরিবর্তন চাই। উত্তারাধিকার সম্পত্তিতে সমানাধিকার চাই।”
মতবিনিয়ম সভা শেষে সম্পা দত্তকে আহ্বায়ক ও স্থানীয় শিল্পী চন্দ, তনুশ্রী ভট্টাচার্য ও ইন্দ্রাণী বিশ্বাস সুমাকে যুগ্ম আহ্বায়ক আর পঞ্চমী দেব রুমাকে সদস্যসচিব করে ‘হিন্দু সম্পত্তিতে নারী অধিকার বাস্তবায়ন’ শেরপুরের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। এছাড়া জয়শ্রী দাস লক্ষ্মীকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা জাসদ সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, সদর উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি সোলায়মান আহমেদ, শেরপুর প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত সভাপতি শরিফুর রহমান, নারীনেত্রী আঞ্জুমান আরা যুথী, নারী উদ্যোক্তা আইরীন পারভীন, তুনশ্রী ভট্টাচার্য বক্তব্য দেন।