জৈবসারে স্বাবলম্বী শেরপুরের শিউলি

জৈবসার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার শিউলি খাতুন।

শেরপুর প্রতিনিধিমো. আব্দুর রহিম বাদল, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Sept 2018, 01:28 PM
Updated : 4 Sept 2018, 02:15 PM

উপজেলার রাংটিয়াপাতার মোড় গ্রামে শিউলির জৈবসার উৎপাদন দেখতে গেলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তার এ কাজে আসার গল্প।

প্রায় ৩০ বছর বয়সী শিউলি বলেন, একসময় তার স্বামী নওশেদ আলী অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করতেন। আবার মাঝেমধ্যে পাহাড় থেকে খড়ি কেটে নিয়ে বাজারে বিক্রি করতেন। খুব কষ্ট করতেন, ঠিকমত সংসার চলত না।

“হঠ্যাৎ একদিন বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের কৃষি বিভাগের লোকজনের কাছে জানতে পারলাম কেঁচো থেকে জৈবসার তৈরির খবর। পরে তাদের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে আমিও শুরু করি।”

বর্তমানে তিনি তিনটি রিং ও দুটি ইটের তৈরি হাউজে সার তৈরি করছেন জানিয়ে বলেন, গোবর ও কেঁচো দিয়ে প্রক্রিয়া করে রাখার পর এক মাসেই সার তৈরি হয়ে যায়।

“প্রতি মাসে সাড়ে পাঁচ মণ জৈবসার উৎপাদন করতে পারি এখন আমি। ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। এ দিয়ে এক মেয়ে ও দুই ছেলের পড়াশোনার খরচ মেটাতে পারি। তাছাড়া পরিবারের সবার জামা-কাপড়সহ সংসারের অন্যান্য প্রয়োজনও মেটাতে পারি।”

এই বাড়তি আয় থেকে স্বামীকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কিনে দিয়েছেন বলে জানান শিউলি খাতুন।

“স্বামীর সম্পদ বলতে ১৫ শতক বসতবাড়ি। আগে খুব কষ্টে সংসার চলত। এখন আর কষ্ট নেই।”

শিউলিকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন ওই গ্রামের আরও ২৫ জন নারী।

জুলেখা খাতুন বলেন, “শিউলির দেখাদেখি আমরাও কেঁচো থেকে জৈবসার তৈরি শুরু করেছি। সার বিক্রির টাকায় আমাদের সন্তানদের পড়াশোনাসহ সংসারের নানা প্রয়োজন মেটাতে পারছি।”

শাহিনুর বেগম নামে আরও এক নারী একই কথা জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, “কেঁচো থেকে জৈবসার তৈরি করে শিউলি এখন স্বাবলম্বী। কৃষিতে জৈবসার ব্যবহারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন।

“আমরা তাকে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। তার বাড়িতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন প্রদশর্নী প্লান্টও করা হয়েছে।”