নাটোরে লেগুনায় বাসের ধাক্কা, নিহত ১৫

নাটোরের লালপুর উপজেলায় বাসের ধাক্কায় এক পরিবারের তিনজনসহ একটি লেগুনার ১৫ আরোহী নিহত হয়েছেন; এরপর রাস্তার পাশে গাছে ধাক্কা দেওয়ায় বাসটির ২০ আরোহী আহত হন।

নাটোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2018, 10:55 AM
Updated : 25 August 2018, 05:12 PM

লালপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে নাটোর-পাবনা মহাসড়কের কদিমচিলান ক্লিক মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনা তদন্তে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। 

দুর্ঘটনার সময় লেগুনার চালক মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন বলে এক যাত্রী জানিয়েছেন।

ওসি নজরুল নিহতদের মধ্যে ১২ জনের নাম জানিয়েছেন। এরা হলেন- লেগুনার চালক ঠাকুরগাঁওয়ের রহিম আলী (২৮), নাটোরের বড়াইগ্রামের নারায়ণপুরের রজুফা বেগম (৫০), শেফালী বেগম (৪৫), জামাইদিঘার লগেনা বেগম (৬৫), পাবনার দাশুড়িয়া মিরকামারি গ্রামের শাপলা আক্তার (২০), শাপলার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১১ মাস), পাবনার পাকশির সোবহান আলী (৭৫), টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার রোকন শেখ (২২), পাবনার পাকশীর সোবহান (৫০) ও মূলাডুলি শ্মশানপাড়ার আদুরি বিশ্বাস (৩৫), তার মেয়ে স্বপ্না বিশ্বাস (দশ মাস) ও ছেলে প্রত্যয় বিশ্বাস (১২)। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

আহতদের নাটোর সদর হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

ওসি নজরুল বলেন, চ্যালেঞ্জার পরিবহনের একটি বাস যাত্রী নিয়ে পাবনা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিল। এদিকে লেগুনাটি যাচ্ছিল বনপাড়া থেকে ঈশ্বরদী। ক্লিক মোড়ে সাদিয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে বাসটি লেগুনাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে খাদে গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। বাসের ধাক্কায় লেগুনাটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে।

“দুর্ঘটনায় নিহত সবাই লেগুনার আরোহী; লেগুনার চালক, হেলপারও নিহত হন। নিহতদের মধ্যে তিন শিশু ও ছয়জন নারী রয়েছেন।”

বাসটির চালক পলাতক। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি নজরুল।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সাদিয়া ফিলিং স্টেশনকর্মী জাহের আলী সাংবাদিকদের বলেন, দুর্ঘটনার সময় বৃষ্টি ছিল। ওই সময় বিকট শব্দ শুনে তারা রাস্তায় যান।

নুরসেদ সরদার (৭২) নামের লেগুনার এক আহত যাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, লেগুনাটি বড়াইগ্রামের বনপাড়া থেকে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া যাচ্ছিল। ছাড়ার পর থেকে চালক এলোমেলো গাড়ি চালাচ্ছিল। দুর্ঘটনার সময় চালক মোবাইল ফোনে কথা বলছিল।

দুর্ঘটনায় নিহত লগেনা বেগম নুরসেদ সরদারের স্ত্রী।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি সামসুন নূর সাংবাদিকদের জানান, লেগুনাটির নিবন্ধন ও ফিটনেস ছিল না বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এছাড়া দুর্ঘটনাবকলিত বাসটি এ সড়কে নিয়মিত চলাচল করে।

নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজ্জাকুল ইসলাম দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দুর্ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।