বুধবার সকাল ৯টায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক এই ময়দানে ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মার্কাজ জামে মসজিদের খতিব মুফতি হিবজুর রহমান।
নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খাদেদসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনীতিকসহ সর্বস্তরের মানুষ জামাতে অংশ নেন।
ঈদগাহ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক বলেন, শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ঈদের জামাতে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করা হয়।
একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে আর অপর ট্রেনটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে বিপুল সংখ্যক যাত্রী নিয়ে শোলাকিয়া আসে।
জামাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তেু নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহে। এ সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য আশপাশের সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, এবার ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুই প্লাটুন বিজিবিসহ র্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
“নজরদারি নিখুঁতভাবে নিশ্চিত করার জন্য মাঠে ওড়ানো হয় ক্যামেরাযুক্ত দুটি ড্রোন। এছাড়া জামাতে অংশ নেওয়ার জন্য সবাইকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়।”
২০১৬ সালের ৭ জুলাই ইদুল ফিতরের দিন সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিম উদ্দিন হাইস্কুলের পাশে পুলিশ সদস্যদের উপর সশস্ত্র হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় পুলিশের দুই সদস্য, বাড়ির ভিতরে থাকা এক গৃহবধূ এবং পুলিশের গুলিতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র আবির রহমান নামে এক হামলাকারী জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন এবং আট পুলিশ সদস্য ও তিন পথচারী গুরুতর আহত হন।
পুলিশ সুপার বলেন, এসব বিষয়ে আমলে রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
জনশ্রতি আছে, কোনো এক ঈদের জামাতে শোলাকিয়ায় সোয়া লাখ মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত।