নাটোরে কৃষক আব্দুল কাদের হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় কৃষক আব্দুল কাদের হত্যার ১৪ বছর পর পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

নাটোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2018, 07:45 AM
Updated : 19 August 2018, 12:56 PM

রোববার দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত দায়রা জজ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সিংড়া উপজেলার বিয়াস গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান ওরফে হাফিন (৪৫), খলিলুর রহমানের ছেলে মো. বুলু (৪২), খবির উদ্দিনের ছেলে খলিলুর রহমান ওরফে খলিল (৪০), রহেদ আলীর ছেলে মজিবর রহান ওরফে মজি (৪৫), গুরুদাসপুর উপজেলার যোগেন্দ্রনগর গ্রামের আবুল মোল্লার ছেলে মনির হোসেন (৫০)।

এদের মধ্যে বুলু, খলিল ও মনির পলাতক রয়েছেন।

যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন গুরুদাসপুর উপজেলার যোগেন্দ্রনগর গ্রামের বয়েন উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম ওরফে দুদু ও আব্দুল হাকিম।

যাবজ্জীবনের পাশাপাশি দুইজনকেই এক লাখ এক টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া আসলাম ওরফে জবান ও নজরুল ইসলাম নামে দুই আসামি মারা যাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান এপিপি মাসুদ হাসান জানান।

সর্বহারা দলের সদস্যদের চাঁদা দাবির কথা প্রচার করে দেওয়ায় আব্দুল কাদেরকে উপজেলার বিয়াস বাজারে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে রায়ে বলা হয়েছে।

এপিপি বলেন, রায়ে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ এবং গ্রেপ্তার হওয়া মাত্র রায় কার্যকর করার কথাও বলা হয়েছে।

দণ্ড ঘোষণার আগে আদালত উল্লেখ করে যে, সর্বহারাদের চাঁদা দাবির কথা প্রকাশ করে দেওয়ায় আসামিরা একজন সাধারণ কৃষককে সকাল বেলা নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে।

এটা পৈশাচিক ঘটনা উল্লেখ করে রায়ে আরও বলা হয়, ঘটনার সঙ্গে আসামিরা সবাই জড়িত ছিল। তাদের মধ্যে আসামি মজিবর রহমান বিচারিক হাকিমের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আসামিরা সিংড়ার বিয়াস গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদেরের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সামনে থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে বিয়াস বাজারে নিয়ে সবার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় তার স্ত্রী জয়নব বেওয়া বাদী হয়ে ওই দিন সিংড়া থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ওইবছর ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

মামলার বাদী জয়নব বেওয়া বলেন, হত্যকারীরা সবাই সর্বহারা দলের সদস্য। তারা স্থানীয় একটি হাসপাতালের নির্মাণ কাজের ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করেছিল এমন কথা প্রচার করার অভিযোগ তুলেছিল তার স্বামীর বিরুদ্ধে।