জামিনে থাকা মামলার আসামিরা সরেনের স্বজনদের হত্যাসহ নানা হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
দীর্ঘ সময়েও বিচার শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন আদিবাসী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
২০০০ সালের ১৮ অগাস্ট একটি ভূমিদস্যুচক্রের লাঠিয়াল বাহিনী মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর গ্রামের আদিবাসী পল্লীতে হামলা চালায়। তারা ভূমিহীনদের নেতা আলফ্রেড সরেনকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই হামলায় পল্লীর নারী-শিশুসহ ৩০/৩৫ জন আহত হয়। বাড়িঘরে আগুন দেয়, ভাংচুর ও লুটপাট করে।
এ হত্যা মামলার অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী শীতেষ ভট্টাচার্য গদাই ও হাতেম আলী চেয়ারম্যান। তারা এখন জামিনে মুক্ত আছেন। হাই কোর্টের আদেশে মামলাটি এখন স্থগিত রয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে সরেনের পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও দেশছাড়া করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
দিনটি স্মরণ উপলক্ষে শনিবার বেলা ১১টায় ভীমপুর গ্রামে আলফ্রেড সরেনের সমাধিস্থলে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এর আগে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, বাসদ, স্থানীয় আদিবাসী ও স্বজনদের পক্ষ থেকে আলফ্রেড সরেনের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।
নওগাঁ শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে মহদেবপুর উপজেলার আদিবাসী পল্লী ভীমপুর। এখানে সরেনকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় আলফ্রেড সরেনের বড়ভাই কমল সরেন জননিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহশিন রেজা জানান, হাই কোর্টের আদেশে মামলাটি এখন স্থগিত রয়েছে।
সরেনের ছোট ভাই মহেশ্বর সরেন বলেন, আসামি শীতেষ ভট্টাচার্য গদাই ও হাতেম আলী চেয়ারম্যানদের অব্যাহত হুমকির মুখে সরেনের বড়ভাই কমল সরেন ও বোন রেবেকো সরেন এখন গ্রামছাড়া। আমাকেও গ্রামছাড়া করতে তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।”
সরেনের মেজ বোন সমনী সরেন বলেন, তারা জামিনে মুক্ত হয়ে এসে এখন ছোট ভাই মহেশ্বরকেও হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।
এই আদিবাসী পল্লীর গৃহবধূ অঞ্জনা রানী বলেন, “বিচার না হলে আমরা গ্রামে থাকতে পারব না। আসামীদের হুমকি ও অত্যাচারে বসত ভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে।”
আদিবাসী পল্লীর পঞ্চানন বলেন, “তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকেসহ অন্যান্য আদিবাসীদের হয়রানি করছে।”