অসুস্থ হয়ে ভর্তি হওয়ার পর হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে ছিলেন এ নৃত্যশিল্পী।
এ বিষয়ে তার এক শিষ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট দিলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এরপর রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবির্ক) আলমগীর কবির হাসপাতালে যান এবং হাসপাতালের পরিচালককে ফোন করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
আলমগীর কবির দাঁড়িয়ে থেকে দুপুরে ওয়ার্ডের ৩ নম্বর শয্যায় তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন এ নৃত্যশিল্পীকে।
বুকে ব্যথা অনুভব করায় শুক্রবার রাত পৌনে ২টার দিকে তাকে হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
সেখানে তাকে অবহেলার অভিযোগ করেন তার মেয়ে মেয়ে নাজনিন।
তিনি বলেন, নগরের শিরোইলে তার বাসায় থাকেন বজলুর রহমান বাদল। প্রায় এক মাস ধরেই তিনি অসুস্থ। হৃদরোগ ছাড়াও আছে উচ্চ রক্তচাপ।পুরো শরীর ফুলে গেছে।
“শুক্রবার রাত ১টার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করেন এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অ্যাম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে নিয়ে এলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন জানিয়ে চিকিৎসক তাকে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে দেন।
“কিন্তু কোনো শয্যা না পাওয়ায় তাকে মেঝেতেই রাখা হয়।”
নাজনিন বলেন, “রাতে আমরা তার পরিচয় দিয়েছিলাম। নার্সরা বললেন, বেড খালি নেই। তাই তাদেরও কিছু করার নেই।
“তাই কেবিনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ডাক্তার বললেন, এই ধরনের রোগীদের কেবিনে রাখার ব্যবস্থা নেই।”
মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বজলুর রহমান বাদল মেঝেতে শুয়ে থাকবেন এটা হতে পারে না। তিনি শুধু রাজশাহী নয়, গোটা দেশের গর্ব।
“খবরটি শুনেই আমি তাকে শয্যা দেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলি।”
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, জানার পরে একটি শয্যা খালি করতে যতটুকু সময় লেগেছে। তারপরই শয্যার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।
“তার তেমন কোনো সমস্যা নেই। তার হার্ট ঠিকই আছে। তারপরেও দুএকটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলে তা দেখে ছেড়ে দেওয়া হবে।”
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গত বছর স্বাধীনতা পদক পান ৯৫ বছর বয়সী এই নৃত্যশিল্পী। শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে পেয়েছেন তিনি। পেয়েছেন ‘নৃত্যগুরু’ উপাধি।
১৯২৩ সালের ১৮ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের মালদজে জন্মগ্রহণ করেন ফজলুর রহমান বাদল। ১৯৪৫ সালে মালদহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন তিনি। পরের বছর নাটক করতে রাজশাহী এসে আর ফিরেননি তিনি।