যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সাড়ে ৩ ঘণ্টা রাস্তায় জলঢাকার এমপি

নীলফামারীর জলঢাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের হট্টগোলে জাতীয় শোক দিবসের এক অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সাড়ে তিন ঘণ্টা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2018, 04:11 AM
Updated : 16 August 2018, 04:13 AM

নীলফামারী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি গোলাম মোস্তফার অভিযোগ, যুবলীগ নেতা ওয়াহেদ বাহাদুর তাকে ‘অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত’ করেছেন।

গোলাম মোস্তফা ও তার সমর্থকরা জলঢাকা শহরের জিরো পয়েন্টে সড়কের উপর অবস্থান নিয়ে থাকায় বুধবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত জলঢাকা রংপুর, নীলফামারী, ডোমার, ডিমলা ও পঞ্চগড় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

পরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের আশ্বাসে গোলাম মোস্তফার সমর্থকরা রাস্তা ছাড়লে ওই সড়কে যান চলাচল শুরু হয় বলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রুহুল আমীন জানান।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জলঢাকা শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল সম্মিলিত সাংষ্কৃতিক জোটের উপজেলা কমিটি। উম্মুক্ত আলোচনায় সাংসদের বক্তব্যের সময় শুরু হয় হট্টগোল।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা জানান, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর লোকজন নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে এসে সংসদ সদস্যকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ শুরু করেন। এ সময় সাংসদের সমর্থকরা প্রতিবাদ করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ এসে আলোচনা সভা বন্ধ করে দেয়।

অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর যুবলীগ নেতা ওয়াহেদ বাহাদুরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে জলঢাকা জিরো পয়েন্টে গিয়ে অবস্থান নেন সাংসদ ও তার সমর্থকরা। আশপাশে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব।

রাত সাড়ে ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ফোন করে সাংসদ গোলাম মোস্তফাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করলে গোলাম মোস্তফা তার সমর্থকদের নিয়ে সরে যান।

অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সুন্দরগঞ্জের প্রয়াত এমপি লিটনের ওপর যেভাবে আঘাত করা হয়েছিল, হামলা চালানো হয়েছিল সে কায়দায় আজকে ঘোষণা দিয়ে আমার ওপর হামলা চালিয়েছে আব্দুল ওয়াহেদ। সে বার বার আমার চরিত্র হননের চেষ্টা করেছে। আমি একাধিকবার তার বিরুদ্ধে জিডি করেছি।”

বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আলোচনা অনুষ্ঠানের ঘটনার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে সড়কে অবস্থান নিয়েছে মন্তব্য করে এই সংসদ সদস্য বলেন, “ওয়াহেদ একজন সন্ত্রাসী, আমি তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে যুবলীগ নেতা আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরকে ফোন করলেও তিনি ধরেননি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রুহুল আমীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এমপি মহোদয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করব। বিক্ষুদ্ধরা যে দাবি তুলেছেন সেটিও আমরা দেখব।”

অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা দশম সংসদ নির্বাচেন প্রথমবারের মত জলঢাকা-কিশোরগঞ্জ (আংশিক) উপজেলা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-৩ আসনের এমপি নির্বাচিত হন। যুবলীগ নেতা আবদুল ওয়াহেদ বাহাদুরও আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান।