পদ্মায় লঞ্চঘাট ধসে নিখোঁজদের সন্ধান মেলেনি

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সাধুর বাজার লঞ্চঘাট ধসে নিখোঁজ ১০ জনের সন্ধান একদিন পরও মেলেনি।

কে এম রায়হান কবীর শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2018, 01:26 PM
Updated : 8 August 2018, 02:10 PM

মঙ্গলবার দুপুরে সাধুর বাজার লঞ্চঘাট ধসে পদ্মা নদীতে পড়লে ১০ জন নিখোঁজ হন বলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে নয়জন নিখোঁজের কথা বলেছিল স্থানীয়রা; কিন্তু উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস পাঁচজন নিখোঁজের কথা স্বীকার করেছিল। 

নিখোঁজ এক বৃদ্ধ

নিখোঁজদের একজন

নিখোঁজরা হলেন পাচুখারকান্দির মোশারফ চোকদার, বাড়ৈপাড়ার জামাল ছৈয়াল, কেদারপুরের মজিবর (মজু) ছৈয়াল, শাহজাহান বেপারী, মোক্তারচরের রশিদ হাওলাদার, চাকধ গ্রামের নাছির হাওলাদার, নাছির করাতি, পিরোজপুরের একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির এরিয়া সেলস এক্সিকিউটিভ শেখ আলামিন হাসান, অন্ত মকদম ও উত্তর কেদারপুর গ্রামের গুপি দাস।

একইসঙ্গে সাতটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দুইটি ট্রলি, একটি মাহেন্দ্র জিপ ও  একটি পন্টুন পানিতে তলিয়ে গেছে।

শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল উদ্ধার কাজ করছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিয়াজ আহমেদ বলেন, “লঞ্চঘাট এলাকা নদীতে বিলীন হওয়ার খবর পেয়ে আমরা উদ্ধার অভিযানে ডুবুরিদল নদীতে নামানোর পর প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধারর কাজে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসি। নৌকা-ট্রলার যোগে সন্ধান কাজ চলছে। আমাদের কাছে তালিকা অনুযায়ী এখনও ১০জন নিখোঁজ রয়েছে।”

নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনরা পদ্মাপাড়ে অপেক্ষা করছে।

কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ঈমাম হোসেন দেওয়ান জানান, মঙ্গলবার বিকাল থেকেই নিখোঁজদের স্বজনসহ হাজার হাজার উৎসুক জনতা সাধুরবাজার এলাকায় ভিড় করছে। স্বজন হারানোর আশংকায় তারা আহাজারি করছে।  

এক স্বজনের আহাজারি

এক স্বজনের আহাজারি

নিখোঁজ শাহজাহান বেপারীর মেয়ে শাহনাজ বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার বাবা একজন রিকশা চালক। সে দোকানপাট সরানোর কাজে সহায়তা করতে এসে নিখোঁজ হয়ে যায়। তার কোনো সন্ধান পাইনি। আমার একটি বোন ও একটি ভাই প্রতিবন্ধী। আমরা কীকরে ওদের নিয়ে বাঁচব।”

পিরোজপুরের  রুহুল আমি বলেন, “আমার ভাই শেখ আল আমিন হাসান আইটিএল মোবাইল কোম্পানির সেলস এক্সিকিউটিভ। সে এ এলাকায় মার্কেট ভিজিটে এসে ভাংগন দেখতে যায়। এ সময় হঠাৎ মাটি দেবে গেলে পানির স্রোতে হারিয়ে যায়। তার কোনো সন্ধান পাইনি।”

নড়িয়া থানার ওসি আসলাম উদ্দিন বলেন, নিখোঁজের তালিকা দীর্ঘ হয়েছে। স্বজনদের দাবি অনুযায়ী এখন ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে। প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ করতে পারছে না ডুবুরিরা। নৌকা-ট্রলার যোগে সন্ধান কাজ চলছে। আইনশৃংখলার কাজে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নিখোঁজদের প্রতি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছেন।

পরিদর্শনকালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মার ভাঙন রোধে গত ২ জানুয়ারী পদ্মার দক্ষিন তীর রক্ষা বাধ নির্মানের জন্য ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে তা এক নেকের বৈঠকে পাস করেন।”

এ প্রকল্পের কাজ আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হবে বলে জানান শামীম।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের, নড়িয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা ইয়াসমিন, নড়িয়া পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী, সাবেক চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন দেওয়ান প্রমূখ।