আঞ্চলিক সমিতির দ্বারে দ্বারে সিলেটের মেয়র প্রার্থীরা

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারের শেষ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন সেই ভোটাররা, যারা কর্মসূত্রে সিলেট নগরীতে থাকলেও স্থায়ী ঠিকানা দেশের অন্য কোনো জেলায়।

মঞ্জুর আহমদ সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2018, 10:38 AM
Updated : 27 July 2018, 10:39 AM

এ কারণে বিভিন্ন আঞ্চলিক সমিতিতে গিয়ে সেইসব ভোটারের ভোট টানার চেষ্টা করছেন মেয়র পদের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী।

এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান জানান, সিলেট সিটির মোট ভোটার ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের স্থায়ী ঠিকানা সিলেটের বাইরে।

এদের অনেকেই সিলেটে বিভিন্ন আঞ্চলিক সমিতির সঙ্গে যুক্ত। আর আঞ্চলিক সমিতিগুলো সদস্যদের মতামত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারে মনে করে এ দিকটায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রার্থীরা। 

নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বিগত নির্বাচনগুলোতেও প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ে সিলেটে বাইরের জেলা থেকে আসা ভোটারদের বড় ভূমিকা ছিল।”

সিলেটে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সাবেক সভাপতি ইরফানুজ্জামান চৌধুরীও এ বিষয়ে একমত।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সিলেটের বাইরে থেকে আসা এই ভোটারদের সংগঠনের সঙ্গে দুই প্রধান প্রার্থীরই আলাদা যোগাযোগ আছে। এসব ভোট যিনি বেশি টানতে পারবেন, তার পাল্লা স্বাভাবিকভাবেই ভারী হবে।”

সিলেট নগরীতে ছোট-বড় মিলে ৩০টির বেশি আঞ্চলিক সমিতি সক্রিয়। এর মধ্যে চারটির সদস্য সংখ্যা সোয়া লাখের বেশি।

এর মধ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহের প্রায় ৬৫ হাজার, বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের ৩৫ হাজার, বৃহত্তর কুমিল্লার ১৫ হাজার, বৃহত্তর খুলনার ১০ হাজার মানুষ এসব সমিতিতে যুক্ত বলে সংগঠনের নেতাদের ভাষ্য।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ইতোমধ্যে খুলনা সমিতি, রংপুর বিভাগীয় কল্যাণ সমিতি, ময়মনসিংহ সমিতি, নেত্রকোণা সমিতি, চট্টগ্রাম সমিতি, জামালগঞ্জ সমিতি, সুনামগঞ্জ সমিতি, মৌলভীবাজার সমিতি, হবিগঞ্জ সমিতি, কুমিল্লা সমিতিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

খুলনা সমিতির প্রচার সম্পাদক শেখ নাসির বলেন, “প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী সম্প্রতি আমাদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা ভোট ও দোয়া চেয়েছেন।”

রংপুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমদও তাদের সঙ্গে দুই মেয়র প্রার্থীর মতবিনিময়ের কথা বলেছেন।

ময়মনসিংহ সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল আলম বাবলু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী ময়মনসিংহ অঞ্চলের জামাই। তাই ভোট কিছুটা ভাগভাগি হতে পারে।”

দুইবার সিলেটের মেয়রের দায়িত্ব পালন করা আয়ামী লীগ নেতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের স্ত্রী আসমা কামরানের বাবার বাড়ি টাঙ্গাইলে। আর সিলেটের গত মেয়াদের মেয়র বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরীর স্ত্রী শামা হক ময়মনসিংহের মেয়ে। 

আসমা কামরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আশা করছি অতীতের মত সিলেটে বসবাসকারী বৃহত্তর ময়মনসিংহের বাসিন্দাদের ভোট নৌকায় পড়বে। সিলেটে বসবাসরত আমার এলাকার সবাই নৌকায় ভোট দেবে। কারণ কামরান সব সময় তাদের সুখে-দুঃখে পাশে ছিল।”

অন্যদিকে শামা হকও আশাবাদী। তার বিশ্বাস, গতবারের মতও এবারও বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে আসা মানুষ আরিফুলকেই বেছে নেবে।

“স্বামীর পক্ষে ভোট চাইতে আমি বিভিন্ন এলাকায় প্রচারে যাচ্ছি। বিশেষ করে নারীদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছি। সবাই আরিফুলের উন্নয়নের বিষয়টি বিবেচনা করে ভোট দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন।”