চার জেলায় গুলিতে নিহত ৫

দেশের তিন জেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন; এছাড়া আরও একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ বলেছে, তার মৃত্যু হয়েছে মাদক বিক্রেতাদের গোলাগুলিতে।

নিউ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2018, 04:32 AM
Updated : 27 July 2018, 06:47 AM

এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কুমিল্লায় দুই সন্দেহভাজন ডাকাত এবং রাজবাড়ীতে এক হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু হয়েছে। 

আর র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিহত হয়েছেন একজন। তিনিও একটি ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন বলে র‌্যাব কর্মকর্তাদের ভাষ্য।

এছাড়া টাঙ্গাইলের ‍পুলিশ সাবেক এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করার খবর দিয়েছে।

আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

কুমিল্লা

কুমিল্লার তিতাসে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ডাকাতি মামলার দুই আসামির নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে তিতাসের বাতাকান্দি নারাকান্দিয়া কবরস্থানের কাছে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই শাহ কামাল আখন্দের ভাষ্য।

নিহতরা হলেন- কুমিল্লার তিতাস থানাধীন উত্তর মানিকনগরের আল-আমিন ওরফে কাউছার (৩০) এবং বুড়িচং থানার কংশনগর চরেরপাড় এলাকার এরশাদ (৩২)।

এর মধ্যে এরশাদের বিরুদ্ধে নয়টি এবং কাউছারের বিরুদ্ধে পাঁচটি ডাকাতির মামলা রয়েছে বলে পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। 

এসআই শাহ কামাল বলেন, ১২/১৩ জন সশস্ত্র ডাকাত নারান্দিয়া কবরস্থানের কাছে অবস্থান নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে খবর পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি নাসির উদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে একটি দল ওই এলাকায় অভিযানে যায়।

“পুলিশ সদস্যরা  কবরস্থানের সামনে পৌঁছালে ডাকাতরা এলোপাতাড়ি ঢিল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ তখন শটগানের গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে ডাকাত দল গুলি করতে করতে পালাতে থাকলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে পাঁচ ডাকাতকে আটক করে। এছাড়া দুইজনকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।”

গুলিবিদ্ধ দুজনকে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন- কুমিল্লার শহরের ভাটপাড়ার মো. আওরঙ্গজেব (৫০), মনোহরগঞ্জের মো. মিলন (৩৫), কাজী পাড়ার নাছির (২৭), তিতাস থানার রায়পুরের শরীফুল ইসলাম এবং মুরাদনগর থানার ছালিয়াকান্দির আবু মিয়া।

এসআই শাহ কামাল বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি এলজি ও চার রাউন্ড গুলিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ অভিযানে চার পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।

রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে লালন হালদার (৪২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

পাংশা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফজলুল করিম বলছেন, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে পাংশার স্লুইসগেইট এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।

নিহত লালন পাবনার সুজানগর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের জীতেন হালদারের ছেলে।

তিনি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা-জুলহাস)দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে পাংশা থানায় হত্যাসহ চারট মামলা রয়েছে বলে পুলিশের ভাষ্য। 

পুলিশ কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, স্লুইসগেইট এলাকায় সন্ত্রাসীদের অবস্থানের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযানে যায়।

“পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ তখন পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থামার পর সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লালনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।”

লালনকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে ফজলুল করিম জানান।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি একনালা বন্দুক, একটি ওয়ান শুটারগান এবং ছয় রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ অভিযানে সাধন ও শাহজাহান নামে দুই পুলিশ কনস্টেবলও আহত হয়েছেন বলে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারের ভাষ্য।

সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হযরত আলী (৪২) নামে এক ‘ডাকাত সরদার’ নিহত হয়েছেন বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

হযরত আলী জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের পঙ্খুরুয়া গ্রামের মাহমুদ আলীর ছেলে।

র‌্যাব ১২-এর সিরাজগঞ্জ কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাকিবুল ইসলাম খান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে উল্লাপাড়া উপজেলার পাইকপাড়া শ্মশানঘাট এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির খবর পেয়ে র‌্যাব অভিযান চালায়।

“ডাকাতদল র‌্যাবকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাব পাল্টা গুলি চালায়। বন্দুকযুদ্ধে ডাকাত সরদার হযরত আলী গুরুতর আহত হন। তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”

হযরত আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতিসহ ১২টি মামলা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, র‌্যাব ঘটনাস্থল থেকে দুটি ওয়ান শুটারগান, তিনটি গুলি ও ‘কিছু দেশি অস্ত্র’ উদ্ধার করেছে।

এ সময় দুই র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তা সাকিবুল ইসলাম।

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে দুই দল মাদক বিক্রেতার গোলাগুলিতে এক ইনিয়ন পরিষদ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিহত মাসুদ রানা ফরিদ (৪২) মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহাদুজ্জামান মিয়া বলেন, শুক্রবার ভোরের দিকে পাহাড়ি অঞ্চল অরণখোলা ইউনিয়নের জলছত্র মাগন্তিনগর এলাকায় দুই দল মাদক বিক্রেতার মধ্যে মাদক বেচাকেনা ও টাকার ভাগবাটোয়ারা হয়।

“ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে দুই পক্ষে গোলাগুলি হয়। পুলিশ খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ফরিদের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ফরিদ অরণখোলা ইউনিয়নের সাবেক সদস্য। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে।”