কয়লা কেলেঙ্কারি: ১৯ খনি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে দুর্নীতি দমন আইনে অভিযোগ দায়ের করেছে খনি কর্তৃপক্ষ।

দিনাজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2018, 06:30 AM
Updated : 25 July 2018, 08:34 AM

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে পার্বতীপুর মডেল থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন।

পার্বতীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফকরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে ২৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

আর্জিতে বলা হয়েছে, খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়া, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নূর-উজ-জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) একেএম খালেদুল ইসলামসহ খনির ব্যবস্থাপনায় জড়িত অপর আসামিরা ওই কয়লা চুরির ঘটনায় জড়িত।

অন্য যাদের আসামি করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই ব্যবস্থাপক, উপ-ব্যবস্থাপক ও সহকারী ব্যবস্থাপক পর্যায়ের কর্মকর্তা।

কয়লার হিসাবে গরমিলের বিষয়টি দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারা অনুযায়ী এজাহারভুক্ত করে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে ওই আর্জিতে।

পরিদর্শক (তদন্ত) ফকরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটি দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মামলাটি দুদকের কাছে পাঠানো হচ্ছে।”

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর নূর-উজ-জামান ও খালেদুলকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পেট্রোবাংলা। হাবিব উদ্দিনকে সরিয়ে আনা হয়েছে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের দপ্তরে। কাশেম প্রধানিয়াকে সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

কয়লা দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধানে নামার পর দুদক ওই চার কর্মকর্তার বিদেশযাত্রা ঠেকাতে ইতোমধ্যে ইমিগ্রেশন বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধান কমিটি সোমবার দিনাজপুরে গিয়ে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কয়লা খনি পরিদর্শন করেছেন এবং ঢাকায় পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বড় পুকরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির কয়লা দিয়ে চলে পাশে অবস্থিত ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লা খনির ইয়ার্ডেই থাকত। কিন্তু হঠাৎ করে কয়লা সঙ্কট দেখা দেওয়ায় গত রোববার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন।

দুদক কর্মকর্তারা সোমবার পরিদর্শনে গিয়ে খনির ইয়ার্ডে দুই হাজার টন কয়লা পান, যদিও কাগজে-কলমে সেখানে এক লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এই কেলেঙ্কারির জন্য কয়লা খনির কর্মকর্তাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।

কয়লা কীভাবে উধাও হল, তার ‘পূর্ণ তদন্ত’ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর