বুধবার ভোরে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া বাঁচামিয়ার ঘোনা এলাকা এবং রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের পানিরছড়া এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে বলে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. সাফায়েত হোসেন জানান।
নিহতরা হলেন- বাঁচামিয়ার ঘোনা এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী জামাল হোসেনের চার সন্তান আব্দুল হাই (৬), খাইরুন্নেছা (৮), কাফিয়া আক্তার (১০) ও মর্জিয়া আক্তার (১৫)। তাদের মা ছেনুয়ারা বেগমও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন।
নিহত অন্যজন হলেন রামুর পানিরছড়া এলাকার জাগির হোসেনের ছেলে মোরশেদ আলম (৬)। জাগির হোসেনকেও আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজারসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায় গত তিন দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি নরম হযে ধস নামতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস থেকেও সতর্ক করা হচ্ছিল।
“এক পর্যায়ে হঠাৎ বাড়ির পেছনের পাহাড় থেকে কাদার স্তর নেমে আসে। জামালের চার ছেলেমেয়ে তখন ঘরের ভেতরে ঘুমাচ্ছিল। ওই অবস্থাতেই তারা মাটিচাপা পড়ে।”
ধসের মধ্যে ছেনুয়ারা নিজেও আহত হন। কোনোক্রমে তিনি বেরিয়ে এসে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয় এবং উদ্ধারকর্মীরা এসে মাটি সরিয়ে চার শিশুকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা সাফায়েত।
সাফায়েত বলেন, পানিরছড়ায় দুই পাহাড়ের মাঝে জাগির হোসেনের বাড়ি ধসের মাটিতে চাপা পড়লে তার ছেলে মোরশেদ ভেতরে আটকা পড়ে। তাকে উদ্ধার করার চেষ্টায় জাগির হোসেনও আহত হন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়দের সহায়তায় মোরশেদের লাশ মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান সাফায়েত।
বৃক্ষ নিধন আর নিয়ম ভেঙে পাহাড় কাটার কারণে প্রতি বছরই দেশের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
এর মধ্যে নতুন করে আসা সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য থাকার ব্যবস্থা করতে গিয়ে কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকার পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় ধসের ঝুঁকি বেড়ে গেছে বহুগুণ।
গতবছর ১১ থেকে ১৩ জুন ভারি বর্ষণের ফলে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজার জেলায় অন্তত ১৫৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে বান্দরবানে মৃত্যু হয় ৬ জনের।