ওসমানীতে সেই কিশোরীকে ধর্ষণের ‘সত্যতা মিলেছে’

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর সঙ্গে আসা কিশোরীকে ধর্ষণের সত্যতা পাওয়ার কথা বলেছে পুলিশ।

মঞ্জুর আহমদ সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2018, 05:00 PM
Updated : 24 July 2018, 05:00 PM

হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ওই ছাত্রীকে পরীক্ষা করে তৈরি রিপোর্ট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার এসআই আকবর হোসাইন ভূঁইয়া।

এদিকে, ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিতে আরও ১৫ দিন সময় চেয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আকবর বলেন, “ওসিসি থেকে ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টে ধর্ষণের সত্যতা পাওয়া গেছে।”

তবে বিষয়টি আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সিআইডির ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টে পাঠানো হবে ২/১ দিনের মধ্যেই। এছাড়া ভিকটিম এবং সেই ইন্টার্ন চিকিৎসকের ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান এসআই আকবর।

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আকবর বলেন, পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছে। ইতোমধ্যে ভিকটিম আদালতে ২২ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ঘটনা বর্ণনা করেছে। সিআইডি থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর পুলিশ বিষয়টি নিয়ে আরও এগিয়ে যাবে।

গত ১৫ জুলাই রাত দেড়টার দিকে ওসমানী মেডিকেলের নাক-কান-গলা বিভাগের ইন্টার্ন চিকিৎসক মাকামে মাহমুদ মাহী নবম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে (১৪) ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। মেয়েটি তার নানির সঙ্গে হাসপাতালে ছিল। ফাইল দেখার কথা বলে মাহী মেয়েটিকে তার রুমে নিয়ে যান বলে অভিযোগ করে তার পরিবার।

১৬ জুলাই ধর্ষণের অভিযোগে মাহীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিনই মেয়ের বাবা কোতোয়ালি থানায় মাহীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার পরদিন (১৭ জুলাই) হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগীয় প্রধান এস কে সিনহাকে প্রধান করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সে সময় কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিতে আরও ১৫ দিন সময় চেয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক দেবব্রত রায়।

তদন্ত কমিটির প্রধান হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগীয় প্রধান এন.কে. সিনহা বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও ১৫ দিন সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

“যেহেতু অভিযুক্ত এখন কারাগারে আছেন তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের অনুমতি লাগবে। এছাড়া ভিকটিমকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। আর এতে আরও কিছু সময় প্রয়োজন। তাই তদন্তের সময় বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে।”

ইন্টার্ন চিকিৎসক মাকামে মাহমুদ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেলের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

ঘটনার পর থেকে মাহীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বারবার মেয়ের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে মেয়েটির স্বজনদের ভাষ্য।

মেয়েটির বাবা বলেন, “ঘটনাটি মীমংসা করার জন্য চিকিৎসক মাহীর পরিবার আমাদের সঙ্গে বসার জন্য অনেকবার অনুরোধ জানিয়েছে। এমনকি তারা সিলেটের প্রভাবশালী কয়েকজনের কাছে গিয়ে এ বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বলেছে। তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি হইনি।”