নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি, শিক্ষক বরখাস্ত 

শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর ময়মনসিংহে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ইলিয়াস আহমেদ ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2018, 11:52 AM
Updated : 18 July 2018, 11:52 AM

এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে প্রক্টরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

যৌন হয়রানির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হুমায়ন কবীর জানান, নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

“একই সাথে এসব ঘটনায় দ্বায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে প্রক্টর জাহেদুল কবীরকে অব্যাহতি দিয়ে সহকারী প্রক্টর উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”     

রেজিস্ট্রার হুমায়ন আরও জানান, যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ আজিজুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিন্ডিকেট সদস্য এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকাকে সদস্য করা হয়েছে।

আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।   

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, নাট্যকলার শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে গত ১৭ জুলাই উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন তিন শিক্ষিকা।

লিখিত অভিযোগে এক শিক্ষিকা বলেন, গত ১৭ জুলাই বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সভা শেষে শিক্ষক রুহুল আমিন তার দিকে ‘যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন এবং চোখ টিপ দিয়ে খারাপ ইঙ্গিত করেন। এছাড়াও রুহুল আমিন বিভিন্ন সময় নোংরা ইঙ্গিতপূর্ণ কথাবার্তা লেখা তাকে টেক্সট করেছেন।  

আরেক অভিযোগকারী বলেন, একদিন রুহুল আমীন তার চুলে ও গালে হাত দিয়েছিলেন। তিনি এর প্রতিবাদ করলেও ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময় কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অশালীন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চলছেন।

অপর অভিযোগকারী বলেন, শাড়ি পরে এলে রুহুল আমিন তার দিকে নোংরাভাবে তাকিয়ে থাকেন এবং নোংরা মন্তব্য করেন।

এ ঘটনায় তিনি সাবেক সাবেক উপাচার্যের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার করেননি বলে অভিযোগ এই শিক্ষিকার।  

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে রুহুল আমিন বলেন, নাট্যকলা বিভাগের প্রথম ব্যাচের এমএ ক্লাসের ২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মৌখিক পরীক্ষায় নয়জন ফেল করেছেন।

“এদের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে একাডেমিক সভায় আমিসহ চারজনের প্রস্তাব ছিল- বিধি মোতাবেক পরীক্ষা নেওয়া হোক। কিন্তু অভিযোগরীরাসহ পাঁচজন চাইছিলেন বিনা শর্তে পরীক্ষা নিতে। এনিয়ে বাক-বিতণ্ডার কারণে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে হয়রানি করার জন্যই এসব বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।”    

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এইচ এম মোস্তফিজুর রহমান বলেন, “আমি ব্যস্ত আছি। এবিষয়ে রেজিস্ট্রার কথা বলবেন।”