নারায়ণগঞ্জে হত্যার দায়ে ৪ জনকে ফাঁসির রায়

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় একজনকে হত্যার দায়ে চারজনকে ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2018, 09:42 AM
Updated : 18 July 2018, 09:48 AM

নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।

একই সঙ্গে আদালত তাদের লাশ গুম করার অপরাধে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে। এছাড়া ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে। জরিমানা না দিলে তাদের আরও ছয় মাস কারাগারে থাকতে হবে।

জরিমানার টাকা নিহতের পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জেলার কাশিপুর দেওয়ানবাড়ি এলাকার সাদেকুর রহমান (৩৮), ইকবাল হোসেন (৩০), সোহাগ (৩০) ও বাবু কাজী (৩৫)।

তারা সবাই উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।

এ মামলার অন্য তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। তারা হলেন মোক্তার হোসেন (৪৫), মো. মেহেদী (২৫) ও আবুল হোসেন (৪০)। তারা আদালতে ছিলেন।

জেলার জজ আদালতের পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন মামলার নথির বরাতে বলেন, ২০১৪ সালের ১৫ অগাস্ট পাওনা টাকা আদায়ের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন ফতুল্লা বিসিক এলাকার হাজী আফসার উদ্দিনের ছেলে ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ব্যবসায়ী হালিম উদ্দিন।

পরদিন দেওয়ানবাড়ী এলাকার ডোবা থেকে তার হাত-পা বিচ্ছিন্ন বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় হালিমের ছোট ভাই শামীম অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পিপি ওয়াজেদ বলেন, পুলিশ এ ঘটনায় সাদেকুর রহমান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। সাদেক জবানবন্দিতে জানান, হালিম পাওনা টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। ফলে সাদেকের বন্ধু ইকবাল হোসেনসহ কয়েকজন হালিমকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেন। পরে লাশ পাঁচ টুকরো করে ডোবায় ফেলে দেন।

এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ আদালতে সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। সাক্ষী করা হয় ২৫ জনকে।

আদালত এ মামলায় ২১  জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করেছে বলে জানান পিপি ওয়াজেদ।

তিনি বলেন, সাত আসামির মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত চারজনই উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। তারা আটক বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে রায় কার্যকর হবে।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নিহত হালিমের বাবা আফসার উদ্দিন বলেন, “রায়ে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সাতজনের নাম আসলেও তিনজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।”

আসামিপক্ষের আইনজীবী সুলতানুজ্জামানও রায়ে সন্তুষ্ট নন।

তিনি বলেন, “এ রায়ে আমরা আসামিপক্ষ ন্যায় বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।”