বীরাঙ্গনা জাহানারার জন্য বাড়ি

মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার স্বামী পরিত্যক্তা বীরাঙ্গনা জাহানারা বেগম অবশেষে একটি বাড়ি পেয়েছেন।

মোমেন মুনি জয়পুরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2018, 03:05 PM
Updated : 4 July 2018, 03:05 PM

জয়পুরহাট পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক নিজের অর্থে সরকারের দেওয়া শহরের খঞ্জনপুর মহল্লায় দুই শতক জমিতে এই বাড়িটি নির্মাণ করে দেন।

বুধবার বিকালে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাহানারা বেগমকে (৬১) বাড়িটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়।  

জয়পুরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক কমান্ডার জাকির হোসেন মন্টু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেলা প্রশাসন দুই শতকের একটি খাস জমি জাহানারার নামে বরাদ্দ দেয়। মেয়র নিজের অর্থ থেকে প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয়ে ওই জমিতে বাড়িটি নির্মাণ করে দেন।

“টিনশেডের পাকা এই বাড়িতে একটি ঘর, একটি বারান্দা, রান্নাঘর ও শৌচাগার রয়েছে।”

পানির জন্য একটি টিউবওয়েলও বসানো হয়েছে বলে জানান মন্টু।

মন্টু বলেন, জাহানারার পৈত্রিক বাড়ি জয়পুরহাট সদরের খঞ্জরপুর পূর্বপাড়া গ্রামে। পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হওয়ায় স্বাধীনতার পর জাহানারাকে ছেড়ে যায় তার স্বামী।

“এরপর থেকে তিনি ভিক্ষা করে, মানুষের সাহায্য সহায়তায় দিন কাটিয়ে আসছেন। থাকছিলেন এখানে-সেখানে ভাসমান অবস্থায়।”

কয়েক বছর আগে স্থানীয় কয়েকজন যুবক এলাকার কবরস্থানের পাশে তাকে একটি টিনের ছোট ছাপড়ার মতো বানিয়ে দেয়। এতদিন ওখানেই তিনি থাকছিলেন বলে জানান মন্টু।   

বাড়ি হস্তান্তর উপলক্ষে শহরের খঞ্জনপুর মহল্লায় জাহানারার নবনির্মিত বাড়ির প্রাঙ্গণে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পৌর মেয়রের সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওয়ারেস আনছারী, জয়পুরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক কমান্ডার জাকির হোসেন মন্টু, জয়পুরহাট মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সভায় জেলা প্রশাসক প্রতিমাসে জাহানারাকে দুই হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন, যে অর্থ দেবেন তিনি নিজের বেতনের টাকা থেকে। যতদিন তিনি জয়পুরহাটে থাকবেন ততদিন এভাবে টাকা দিয়ে যাবেন।

এছাড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামও প্রতিমাসে জাহানারাকে দুই হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। এ টাকা দেওয়া হবে শ্রমিক ইউনিয়নের তহবিল থেকে।

আলোচনা সভা শেষে এ দুজন প্রত্যেকে দুই হাজার করে টাকা জাহানারাকে দিয়ে সহায়তার অর্থ দেওয়া শুরু করেন।