তারিকের মাথায় ৯টি সেলাই, ভেঙেছে ডান পা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় এক ছাত্রের ডান পা ভেঙে গেছে; তার মাথায় দেওয়া হয়েছে নয়টি সেলাই।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2018, 05:06 PM
Updated : 3 July 2018, 05:06 PM

আহত তরিকুল ইসলাম তারেক বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক।

তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে পতাকা মিছিল বের করলে রামদা, লোহার রড, হাতুড়ি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে হামলা করে একদল ছাত্র।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের উপর গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।

হাসপাতালের চিকিৎসক সুব্রত কুমারের বরাত দিয়ে আহত তারিকের সহপাঠী মতিউর রহমান বলেন, “তারিকের মাথায় ৯টা সেলাই দেওয়া হয়েছে। প্রচুর রক্তপাত হওয়ায় ওর শরীর অনেক দুর্বল। ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করায় তারেকের ডান পা একেবারে ভেঙে গেছে। ব্যান্ডেজ করা হয়েছে; প্ল্যাস্টার করা হয়নি। “অস্ত্রোপচার না করলে তার পা স্বাভাবিক হবে না। আর তার পুরো শরীরে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সবসময় ব্যথায় কাঁতরাচ্ছেন।”

সিটি স্ক্যান রিপোর্ট অনুযায়ী সুব্রত বলেন, তারিকের মস্তিষ্কে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়নি। তবে পুরোপুরি সেরে উঠতে বেশ সময় লাগবে।

তারিকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাই সারা শরীরে যে আঘাত, যে ব্যথা তা কীভাবে বলে বোঝাব? এই যে বসে আসি, এভাবে কতোক্ষণ বসে থাকা যায় বলেন, নড়াচড়া তো করতেই হয়, তাই না? কিন্তু আমি তো তা পারছি না। একটু নড়লেই ব্যথা লাগছে। সহ্য করার মতো নয় রে ভাই! ওরা আমাকে অনেক মেরেছে। মানুষ মানুষকে এভাবে মারতে পারে!”

মামলা দায়ের করবেন কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারিক বলেন, “ভাই, আমরা সাধারণ ছাত্র হয়ে আন্দোলনে এসেছি। আমরা তো কারো বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছি না। আমরা এতদিনে এসে কেন মামলা করব? আমরা আগেও সাধারণ ছিলাম, এখনও তাই। আমাদের আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ছিল না।”

তারেকের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “আমার বাবা কৃষক। আমরা তিন ভাইবোন পড়াশোনা করি। আমাদের পড়াশোনার খরচ ঠিকমতো দিতে পারে না। তার ওপর আমার ভাইয়ের চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করা, কী হবে আল্লাহ্ জানেন!”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লুৎফর রহমান বলেন, “সেও তো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এখন তার বন্ধুরা মিলে যদি আর্থিক সহায়তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আবেদন করে তাহলে অবশ্যই সহায়তা করা হবে।”

“আমি ব্যস্ততার কারণে যদিও হাসপাতালে তাকে দেখতে যেতে পারিনি। তবে সার্বক্ষণিক আমি তার খোঁজখবর নিচ্ছি,” বলেন প্রক্টর।