গাজীপুরে ‘জঙ্গি আস্তানার’ অভিযান শেষ

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়ির অভিযান শেষ করে চলে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2018, 12:15 PM
Updated : 28 June 2018, 04:33 AM

রোববার ভোরে পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তার ওই দোতলা বাড়িতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পরে বেলা পৌনে ৩টার দিকে অভিযান সমাপ্ত করে চলে তারা চলে যায় বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ব্যাপারে অভিযানে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

ভোরে নিষিদ্ধ জঙ্গি দল জেএমবির আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘিরে অভিযান শুরুর পর কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সিটি) উপ কমিশনার মহিবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টেলিজেন্স উইং ল'ফুল ইন্টারসেপশন সেলের (এলআইসি) সঙ্গে ব্যাকআপ টিম হিসেবে সিটি সদস্যরাও সেখানে আছেন।

সেখানে পুরনো জেএমবির একটি আস্তানা আছে বলে ধারণার কথা জানান কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এডিসি আবদুল মান্নান ।

ওই আস্তানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাওয়া গেছে এবং সেগুলো নিস্ক্রিয় করতে ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী ইউনিটও মাওনা গেছে বলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলাম পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত একজন হাবিলদার। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ভোরে পুলিশ আসার পর তার বাসার নিচ তলার ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমানকে আটক করে এবং ঘণ্টাখানেক তল্লাশি চালিয়ে ওই ঘর থেকে তিনটি পিস্তল ও চারটি বোমা পাওয়ার কথা জানায়।

“পুলিশ একটি পিস্তল আমাকে দেখিয়েছে। তবে বোমাগুলো ভাড়াটিয়ার ঘরেই রেখে গেছে। ঢাকা থেকে পুলিশ এসে নাকি বোমা নিষ্ক্রিয় করবে।”

রফিকুল ইসলাম জানান, আব্দুর রহমান তার স্ত্রী শামসুন্নাহারকে নিয়ে দুই মাস আগে সাড়ে তিন হাজার টাকায় নিচ তলার ওই ঘর ভাড়া নেন। রহমান জানিয়েছিলেন, তিনি পেশায় একজন ড্রাইভার। স্থানীয় একটি রেন্ট-এ কারের প্রাইভেটকার চালান।

বাড়িওয়ালার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আটক আব্দুর রহমান জাকিয়াপাড়া গ্রামের মো. হোসেন আলীর ছেলে।

পরে পুলিশ তার স্ত্রী শামসুন্নাহারকেও আটক করে নিয়ে যায়। শামসুন্নাহার পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ গ্রামের মো. ফজলুল হকের মেয়ে বলে জানান তিনি।

তবে তাদের বিষয়ে পুলিশ বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।

পরে ঘটনাস্থলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহসান হাবীব, ডিএমপি বোমা ডিসপোজাল ইউনিট পরিদর্শক মুমিন খান, বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের এডিশনাল ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রহমত উল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ওই বাড়িতে প্রবেশ করে।

এ সময় গাজীপুরের কালিয়াকৈর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলাম, শ্রীপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান, পরিদর্শক মো. হেলাল উদ্দিনও ঘটনাস্থলে আসেন।

তখন ওই এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে মাইকিং করে এলাকাবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

এরপর স্থানীয়রা বেলা ২টা দিক থেকে পর্যায়ক্রমে চারটি বিকট শব্দ শুনকে পান। পরে বেলা পৌনে ৩টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বলে স্থানীয়রা জানায়।

ঘটনাস্থলে থাকা শ্রীপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, “আমরা শুধু তাদের সহায়তা করতে এসেছি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানা নেই।”