বিধবাকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে ‘হত্যার চেষ্টা’

নওগাঁর রাণীনগরে বস্তাবন্দি অবস্থায় এক বিধবাকে পাওয়া গেছে; সম্পত্তির লোভে দেবর-ননদরা হত্যা উদ্দেশ্যে মারধর করে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।

নওগাঁ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2018, 01:23 PM
Updated : 23 June 2018, 01:23 PM

শনিবার ভোরে পারইল ইউনিয়নের রাতলাই গ্রাম থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয় বলে রানীনগর থানার ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান।

আহত চামেলী আক্তার চায়না (৩৫) ওই গ্রামের মৃত আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী এবং আদমদীঘি উপজেলার উজ্জ্বলতা গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে।

তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আবুল কালাম আজাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির লোভে তার ভাই-বোনরা চায়নাকে মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্যে পুকুরে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ তার মা আমিজা বেগমের।

আমিজা বেগম বলেন, আবুল কালাম প্রবাসী ছিলেন। চায়না দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এর মধ্যে গত ১ জুন আবুল কালাম মারা যায়।

“আমার জামাই তার বাবার ১০ বিঘা জমি ভাগ পায়। এছাড়াও বিদেশ থাকাকালীন অবস্থায় মেয়ের নামে ব্যাংকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা জমা রাখে।”

তিনি বলেন, কালাম মারা যাওয়া পর চায়নার কাছে থাকা স্বর্ণালংকার, টাকা ও জমি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ননদ শাকিলা ইয়াসমিন ও তার স্বামী আব্দুস সালাম পিন্টু, দেবর আলীম ও তার স্ত্রী রিনাসহ পরিবারের সবাই নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।”

এ নিয়ে তারা চায়না ও তাকে মারধর করে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “শুক্রবার রাতে আমি ও চায়না একই ঘরে ঘুমাই। ভোরে বাইরে হট্টগোলে ঘুম ভেঙে গেলে দেখি ঘরের দরজা বাইরে থেকে লাগানো এবং মেয়ে নেই।

“এরপর শুনতে পাই বাড়ির পাশে পুকুরে বস্তাবন্দি অবস্থায় মেয়েকে পাওয়া গেছে। পরিবারের লোকজন আমার মেয়েকে মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্যে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে দেয়।”

ওসি সিদ্দিকুর বলেন, শনিবার ভোরে মুসুল্লিারা মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বস্তার মধ্যে কিছু একটা নড়াচড়া করতে দেখেন। এরপর বস্তা খুলে তারা দেখতে তার ভেতর অর্ধমৃত অবস্থায় চায়নাকে পায় তারা।

 “এ সময় চায়নার হাত, পা ও মুখ বাঁধা ছিল। তার শরীরে মারধরের একাধিক চিহ্নও রয়েছে।”

চায়নাকে প্রথমে আদমদীঘি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।

ওসি বলেন, এই বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। চায়না সুস্থ হলেই সব কিছু জানা যাবে এবং তার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।