‘পুলিশের সামনে’ মুক্তিপণ লেনদেন, ফেরেনি আলাউদ্দিন

অপহরণের পর পুলিশের উপস্থিতিতে মুক্তিপণ দিয়েও কিশোর সন্তানকে ফিরে পাননি বলে অভিযোগ করেছেন ফরিদপুরে এক মা।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2018, 08:12 AM
Updated : 23 June 2018, 08:17 AM

নগরকান্দা উপজেলার পাগলপাড়া গ্রামের গ্রিস প্রবাসী আবুল হোসেনের স্ত্রী জান্নাতি বেগম ফরিদপুর প্রেসক্লাবে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।

তবে পুলিশ মুক্তিপণ লেনদেন বিষয়ে কিছু জানে না বলে দাবি করেছে। মুক্তিপণ দিতে নিষেধ করা হয়েছিল বলেও পুলিশের দাবি।

আর এ ঘটনায় তিনজন আটক হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জান্নাতি বেগম বলেন, তার বড় ছেলে আলাউদ্দিন অন্তর তালমা নাজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। গত ৭ জুন সন্ধ্যার পর নামাজ পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। রাত ১০টার পর যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখা যায়। এর পরদিন নগরকান্দা থানায় জিডি করা হয়।

“জিডি করে বাসায় ফিরতেই অন্তরের মোবাইল ফোন থেকে আমার মোবাইল ফোনে একটি মেসেজ আসে। তাতে অন্তরকে অপহরণের কথা জানিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এটা আমি পুলিশ ও র‌্যাব অফিসে গিয়ে জানিয়ে আসি।”

তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও কোনো কিনারা করতে পারেননি জানিয়ে বলেন, পরে ১৪ জুন মুক্তিপণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অপহরণকারীরা ভাঙ্গার একটি স্কুলে যেতে বলে। কিছুক্ষণ পর তারা তালমা জাইল্যা ব্রিজের কাছে যেতে বলে। তারপর রাতে তারা কোনাগাঁও চকের একটি শ্যালো মেশিনঘরে টাকা রাখতে বলে।

“আমি নগরকান্দা থানার এসআই কবির ও অন্য দুইজন পুলিশকে নিয়ে সেখানে যাই। পুলিশকে আড়ালে রেখে সামান্য দূরে মেশিনঘরে একটি হাঁড়ির মধ্যে আমি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা রেখে আসি। কিছুক্ষণ পর ছোট্ট টর্চের আলো জ্বালিয়ে দুইজন লোক ওই ঘরে ঢোকে। পুলিশও তাদের দেখে। পুলিশ বলল, ‘টাকা যায় যাক, এখন ওদের ধরা যাবে না। টাকা গেলে টাকা পাওয়া যাবে, ছেলে গেলে ফিরে আসবে না।’ তারা টাকা নিয়ে চলে যায়।”

পুলিশের বিরুদ্ধে জান্নাতি বেগম আরও অভিযোগ করেছেন, “দেওয়ার আগে টাকাগুলো গুনে দেখেন নগরকান্দা থানার এসআই লুৎফর।”

টাকা দেওয়ার আগে তিনি তার পরিবারের লোকজন ও পুলিশকে নিয়ে বৈঠক করেন বলে তার দাবি।

এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার ওসি সৈয়দ লুৎফর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।

“মুক্তিপণের টাকা লেনদেনের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।”

নগরকান্দা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন বলেন, “জিডির পরদিন ৯ জুন অন্তর মোটরসাইকেলে করে ফরিদপুর আসে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

মুক্তিপণের টাকা লেনদেনের ব্যাপারে তিনি বলেন, “আমি টাকা দিতে না করেছিলাম।”