পঞ্চগড়ে ‘বিষপানে’ মা ও ছেলের মৃত্যু, মেয়ে হাসপাতালে

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় ‘বিষপানে’ মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে; বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে মেয়ে।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2018, 06:30 AM
Updated : 21 June 2018, 08:06 AM

নিহতরা হলেন উপজেলার শেওরাতলী গ্রামের জয়দেবের স্ত্রী মমতা রানী (৩৫) ও তাদের দেড় বছরের ছেলে রাতুলচন্দ্র রায়।

চেংঠি-হাজরাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অনিলচন্দ্র সরকার এলাকাবাসীর কাছে খোঁজ নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জয়দেব গড়েয়া বাজারে দোকান কর্মচারীর কাজ করেন। সকালের খাবার খেয়ে দুপুরের খাবারও তিনি সঙ্গে নিয়ে যান। রাতে এসে বাড়িতে খান।

“বুধবার সকালে মমতা সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে খাবার রান্না করতে পারেননি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বাগবিতণ্ডা হয়। জয়দেব না খেয়ে চলে যান। সন্ধ্যার দিকে মমতা আমের রসের সঙ্গে তরলজাতীয় বিষ মিশিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে নিজে খান আর ছেলেমেয়েকে খাওয়ান। মেয়ে কান্নাকাটি করতে থাকলে প্রতিবেশীরা গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পায়। ভেতর থেকে দরজা না খোলায় তারা দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে। মমতাকে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আর শিশুদের ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেশ কিছুক্ষণ পরে মমতা ও ছেলেটি মারা যায়।”

মেয়েটিকে পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, “মেয়েটি অনেকটা সুস্থ ও আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।”

জয়দেবের প্রতিবেশী দীনবন্ধু রায়সহ একাধিক পরিবারের বরাতে চেয়ারম্যান বলেন, “মূলত সাংসারিক ব্যস্ততা, দুই শিশুকে সামলানো ও গবাদিপশু দেখভাল করতে গিয়ে মমতা হয়ত খাবার তৈরি করতে পারেননি। অভাব-অনটনের কারণে বাসায় চাল ছিল না বা রান্না হয়নি—এমনটি নয়। বরং তারা বেশ চলত। আশপাশের কেউ সে রকম কিছু বা নিত্য ঝগড়া-বিবাদের বিষয়ে কিছু বলেনি।

“মূলত জয়দেব না খেয়ে চলে যাওয়া ও দুপুরে জয়দেব কী খাবে না খাবে এমন দুশ্চিন্তা আর নিজের ওপর অভিমান করে মমতা এমনটি ঘটিয়েছে বলে প্রতিবেশীরা ধারণা করছে।”

দেবীগঞ্জ থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, মমতা আমের জুসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যা ও আত্মহত্যা করতে চেয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।