গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৬ দিনের প্রচারণা শুরু

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হঠাৎ থমকে যাওয়া প্রচারণা আবার শুরু হয়েছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

আবুল হোসেন গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2018, 07:13 AM
Updated : 19 June 2018, 09:48 AM

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল মনে করেন, খুলনা ও গাজীপুরের অবস্থা এক নয়।

আর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লাহ খান সাংবাদিকদের বলেছেন, তাদের একটিই কথা—প্রার্থী কে তা দেখার সময় নেই। দলীয় প্রতীক নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।

সোমবার শুরু হওয়া এই প্রচারণার মেয়াদ ছয় দিন। এর আগে ২৪ এপ্রিল প্রচারণা শুরু হলেও উচ্চ আদালত ভোট স্থগিত করায় ৬ মে প্রচারণা থেমে যায়।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারিকুজ্জামান বলেন, সে সময় পূর্বনির্ধারিত ১৫ মে ভোট হলে প্রার্থীরা আরও ছয় দিন প্রচারণা চালানোর সুযোগ পেতেন। আগামী ২৬ জুন ভোটের দিন হিসেবে ২৪ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত তারা এই প্রচারণা চালাতে পারবেন।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রার্থীরা ছয় দিনই কাজে লাগাতে মাঠপর্যায়ে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপির প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. হাসান উদ্দিন সরকার ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা সক্রিয়ভাবে মাঠে রয়েছেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মিডিয়া সেলের প্রধান মোহাম্মদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জাহাঙ্গীর আলম সোমবার সকালে ছয়দানার বাসা থেকে বের হয়ে দিনব্যাপী গাছা সাংগঠনিক থানা এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য দিয়েছেন। বিকাল সাড়ে ৫টায় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে এম এ রাজ্জাক মাস্টার দাখিল মাদ্রাসা, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোগড়া মধ্যপাড়া সরকারি প্রাইমারি স্কুল মাঠ ও সাড়ে ৭টায় ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বাসন স্কুল মাঠে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি।

সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মোজাম্মেল হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লাহ খান দলের পক্ষে বক্তব্য দেন।

আজমত সাংবাদিকদের বলেন, “দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী নেতাকর্মীরা একজোট হয়ে নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছে। তাদের একটিই কথা—প্রার্থী কে তা দেখার সময় নেই। দলীয় প্রতীক নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।”

বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. হাসান উদ্দিন সরকারের নির্বাচন সমন্বয়কারী মাজহারুল আলম।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হাসান সোমবার সকালে টঙ্গীতে নিজ বাসভবনে কাশিমপুর এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে ছয় দিনের প্রচারণা শুরু করেন। পরে কাউলতিয়া ও বাসনসহ কয়েকটি এলাকায় গণসংযোগ করেন। এছাড়া ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম তোফা।

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, গাজীপুর জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার প্রচারণায় অংশ নেন বলে জানান সমন্বয়কারী মাজহারুল।

বিএনপির প্রার্থী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী যেসব নেতাকর্মীর নামে মামলা-হামলার অভিযোগ নেই তাদের নির্বাচনী এজেন্ট করা হবে। কেন্দ্র থেকে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগযোগ রক্ষা করছেন। দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র করা হলে তা কঠোরভারে প্রতিহতের ঘোষণাও দিয়েছেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, “খুলনা ও গাজীপুরের অবস্থা এক নয়। গাজীপুরে খুলনার মতো করতে চাইলে গাজীপুরের জনগণ তা প্রতিহত করবে।”

চোখ-কান খোলা রেখে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

এবার ভোটে লড়ছেন মেয়র প্রার্থী সাতজন। ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ২৫৬ জন। আর ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৮৪ জন।

মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন আর নারী ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন।