‘ভুয়া বিলের টাকা না দেওয়ায়’ কর্মকর্তাকে পিটিয়ে জখম

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ‘ভুয়া এতিমদের নামে একটি এতিমখানা কর্তৃপক্ষের তৈরি বিলের টাকা না দেওয়ায়’ হামলার শিকার হয়েছেন উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা।

পিরোজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2018, 03:19 PM
Updated : 3 June 2018, 03:22 PM

রোববার উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান মঠবাড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল আমিন।

আহত মঠবাড়িয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আখলাকুর রহমানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ দাউদখালী ইউনিয়নের বড়হারজী গ্রামের ‘হাজী গুলশান আরা শিশু সদন’-এর সভাপতি মো. আব্দুল গফফার খোকন (৬০) ও এতিমখানার শিক্ষক মাওলানা মোস্তফা মাহামুদকে (৫০) আটক করেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আখলাকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঠবাড়িয়ার বড়হারজী গ্রামের কাঞ্চচ আলী হাওলাদারের ছেলৈ আব্দুল গফফার খোকন ওই গ্রামে ‘হাজী গুলশান আরা শিশু সদন’-এর ২০২ জন এতিম দেখিয়ে ১০১ জনের নামে প্রতিবছর ১২ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ তুলে আত্মসাৎ করে আসছিলেন।

আখলাকুর বলেন, সম্প্রতি ওই এতিমখানার বিরুদ্ধে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধ আলতাফ মাহামুদ ভুয়া এতিম দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।

“ইউএনওর পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সোহাগ হাওলাদার সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শন ও তদন্ত করে ওই এতিমখানায় মাত্র ৪১ এতিম উপস্থিত পান। এ বিষয়ে ভুয়া এতিমের নামে বর্ধিত বরাদ্দ বাতিলের সুপারিশ করে ঊর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন।”

মো. আব্দুল গফফার খোকন ও মাওলানা মোস্তফা মাহামুদ

আখলাকুর রহমান বলেন, রোববার বিকালে গত ৬ মাসের সরকারি অনুদানের ৬ লাখ টাকা বিল চেয়ে ওই এতিমখানার সভাপতি গফফার অফিসে এসে তাকে চাপ প্রয়োগ করেন।

ওই বিল দিতে অস্বীকার করেলে গফফারসহ তার সঙ্গে থাকা ৫/৬ জন সন্ত্রাসী তার উপর চাপাতি ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করেন এবং অফিস, কম্পিউটারসহ আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করেন বলে আখলাকুরের অভিযোগ।

“খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চাপাতি ও হাতুড়ি উদ্ধার করেছে। হামলার সময় উপজেলা পরিষদে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গফফার ও তার সহযোগী মাওলানা মোস্তফা মাহামুদকে একটি কক্ষে আটকে রাখলেও অন্যরা পালিয়ে যায়।”

পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল আমিন জানান, পুলিশ দুই জনকে আটক করেছে এবং এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. সোহাগ হাওলাদার বলেন, “উপজেলা পরিষদের একজন সরকারি কর্মকর্তার দপ্তরে ঢুকে হত্যার উদ্দেশ্যে এভাবে মারধর ও ভাংচুরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।”