নওগাঁয় খাস পুকুরের দ্বন্দ্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খুন

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় একটি সরকারি পুকুরের দখল নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ হাতুড়িপেটা ও কুপিয়ে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে হত্যা করেছে।

নওগাঁ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2018, 02:39 PM
Updated : 27 May 2018, 03:42 PM

রোববার করজগ্রাম সৌখিনপাড়া গ্রামে এ ঘটনার পর দুপক্ষের সংঘর্ষে আরও ছয়জন আহত হয়েছেন।

নিহত আজিম উদ্দিন (৩৫) সৌখিনপাড়া গ্রামের মৃত সৌখিন উদ্দিনের ছেলে এবং স্থানীয় টালিগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি।

আহতরা হলেন ওই গ্রামের আলিম উদ্দিন, মিজানুর রহমান, শহীদ উদ্দিন, বুলু হোসেন, লক্ষ্মণচন্দ্র ও নজরুল ইসলাম। তাদেরকে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পার্শ্ববর্তী আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ মাসুম, আজিজ, রাহিম ও আলম নামে চার যুবককে আটক করেছে।

রাণীনগর থানার ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, ওই গ্রামে মসজিদের পাশে একটি সরকারি পুকুর আছে। সরকারিভাবে পুকুরটি তিন বছর পর পর টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হয়।

ওসি বলেন, সম্প্রতি ইজারার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় টেন্ডারের মাধ্যমে পুকুরটি উপজেলার লোহাচুড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ইজারা পায়।

“কিন্তু প্রায় দুমাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও গ্রামবাসীরা সেই পুকুর হস্তান্তর না করায় রোববার নতুন ইজারাদাররা মালিকরা ওই পুকুরে মাছ ছাড়তে গেলে গ্রামবাসীরা বাধা দেয়।”

গ্রামবাসীর বরাত দিয়ে ওসি বলেন, এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে আজিম উদ্দিন প্রতিপক্ষের হাতুড়িপেটা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে গ্রামের শহীদ উদ্দিন, মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন বলেন, পুকুরটি দীর্ঘদিন যাবত ওই গ্রামের মসজিদ ভোগদখল করে আসছে। এটি জনসাধারণের ব্যবহারের পক্ষে আদালতের রায়ও আছে। কিন্তু হঠাৎ করে কতিপয় ব্যক্তি পুকুরের মালিকানা দাবি করে জবরদখল করার চেষ্টা করে। গ্রামবাসীরা প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে।

ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এ ঘটনার পর এলাকার লোকজন সড়কে অবরোধ দিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে। তারা হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় বলে ওসি জানান।

হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান ওসি সিদ্দিকুর রহমান।