টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন আক্তার কামাল। তার বিরুদ্ধে থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে দুটিতে মানব পাচার এবং তিনটিতে মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার সকালে রামু উপজেলায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকা থেকে ৪৮ বছর বয়সী আক্তার কামালের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল জানান।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে এক হাজার ইয়াবা, একটি দেশি তৈরি বন্দুক ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
“মাদক মামলা মাথায় নিয়ে আক্তার দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। সকালে স্থানীয়রা তার গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তা উদ্ধার করে।”
এ পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, ইয়াবা চোরাকারবারিদের দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে আক্তার নিহত হয়েছেন বলে তারা ধারণা করছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজারের বড় মহেশখালী ইউনিয়নের পাহাড়তলী এলাকা থেকে মোস্তাক আহমদ নামে আরেকজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার ক্ষেত্রেও একই কথা বলেছেন মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান নূর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আক্তার কামাল উখিয়া- টেকনাফের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বড় বোন শামসুন্নাহারের দেবর।
তবে এ ঘটনায় এমপি বদির প্রতিক্রিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।
মাদক পাচারে মদদ দেওয়ার অভিযোগে ২০১৪-১৫ সালে সরকারের এক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বদির নামও এসেছিল। তবে বদি বরাবরই মাদক পাচারে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চলতি মাসের শুরুতে সারা দেশে যে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেছে তাতে প্রতি রাতেই বহু মানুষ কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হচ্ছে।
কোথাও কোথাও লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ বলেছে, ওই মৃত্যু ঘটেছে মাদক কারবারিদের নিজেদের গণ্ডগোলে।
এ অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি বিভিন্ন মহল থেকে ঘুরেফিরে আসছে এমপি বদির নাম। অভিযোগ থাকার পরও দলীয় বিবেচনায় তাকে ছাড় দেওয়ার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছ বিএনপি।
আর জাতীয় পার্টির নেতা এইচ এম এরশাদ সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, “মাদক সম্রাট তো সংসদেই আছে। তাদেরকে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝোলান।”
বিভিন্ন মহল থেকে বদির বিরুদ্ধে মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ আসার পরও কেন সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না- সেই প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, “প্রমাণ করতে হবে, প্রমাণ ছাড়া তো কাউকে ধরা যায় না, একজন এমপিকে চট করে ধরা যায় না। প্রমাণ হলে সে যদি অপরাধী হয় অবশ্যই তার শাস্তি হবে।”