টাকা না দেওয়ায় বন্দুকযুদ্ধের নামে গুলি করে হত্যা, অভিযোগ পরিবারের

ফেনীর ফুলগাজীতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুজনকে টাকা না পেয়ে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তাদের স্বজনরা।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2018, 05:42 AM
Updated : 24 May 2018, 08:18 AM

তবে পুলিশের দাবি,বুধবার মধ্যরাতে ফুলগাজী উপজেলা আনন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামে মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির সময় সাহমিত হোসেন শামীম (২৫) ও মজনু মিয়া মনির (২৩) নামে ওই দুইজন নিহত হয়েছে।

টাকা চাওয়ার বা তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন ফুলগাজী থানার ওসি হুমায়ুন কবীর।

শামীমের মা আনোয়ারা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশের জমিতে গরুর জন্য ঘাস কাটছিল তার ছেলে। বেলা ২টার দিকে ফুলগাজী থানার এসআই শফিক এসে সেখান থেকে শামীমকে নিয়ে যায়।

“পরে পুলিশ আমাদের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় রাতে ওকে গুলি করে হত্যা করেছে।”

একই ধরনের অভিযোগ করেছেন মজনু মিয়া মনিরের বোন রেজিনা বেগম।

তিনি বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে এসে একদল লোক বুধবার রাতে ফেনী শহরের বড় মসজিদ এলাকায় মনিরের বোনের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করা হয়।

“রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গেলে আমাদের তাড়িয়ে দেয়। টাকা দিতে না পারায় ভোর রাতে পুলিশ মনিরকে গুলি করে মেরেছে।”

রেজিনা বলছেন, তার ভাই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তার চাচা বিএনপির রাজনীতি করেন। পুলিশ ‘ষড়যন্ত্র করে’ তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। দফায় দফায় তারা পুলিশকে মোটা অংকের টাকাও দিয়েছেন।

তবে ফুলগাজী থানার ওসি হুমায়ুন কবীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “পুলিশ কাউকে বাড়ি থেকে তুলে আনেনি। টাকা চাওয়ার কোনো ঘটনাও ঘটেনি। মাদকের টাকায় তাদের পরিবার চালাত বলে স্বজনরা এসব মনগড়া অভিযোগ করেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।”

‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, চোরাকারবারিরা মাদকের চালান নিয়ে ভারত সীমান্ত দিয়ে দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামে প্রবেশ করেছে খবর পেয়ে পুলিশ রাতে সেখানে অভিযানে যায়।

“জামুয়া রাস্তার মাথায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শামীম ও মনির গুলিবিদ্ধ হয়।”

তাদের ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি। 

ওসি হুমায়ুন বলছেন, এই অভিযানে পুলিশের আট সদস্য আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, তিন রাউন্ড কার্তুজ, ৭০০ ইয়াবা ও দুই শতাধিক বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

ফেনীতে পুলিশ ও র‌্যাবের এই কথিত বন্দুকযুদ্ধে গত নয় দিনে ছয়জন নিহত হয়েছে।