এখনও এ দুই এলাকা উন্নয়নবঞ্চিত রয়েছে। এখানে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র নেই। চলাচলের তেমন কোনো ভালো রাস্তা নেই।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কড্ডা সেতু পেরিয়ে উত্তর দিকে তাকালে শূন্য কিলোমিটারে অবস্থিত বাইমাইল নয়াপাড়া ও বাইমাইল নদীরপাড়। সিটি কর্পোরেশনের এ এলাকায় প্রায় ১৫শ ভোটারের বসবাস। বাইমাইল নদীরপাড় লাগোয়া উত্তরের এলাকাটির নাম কাতলাখালি। ওই এলাকাটিতেও হাজার খানেক লোক বসবাস করে। এর মধ্যে ভোটার রয়েছে প্রায় ২/৩শ।
রোববার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে গ্রাম দুটির হতচ্ছাড়া অবস্থা। সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলেও এলাকার মানুষের জন্য তেমন কোনো নাগরিক সুবিধা নেই।
বাইমাইল নদীরপাড় গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ এলাকার মানুষ যেন একটি আলাদা ভূখণ্ডে বসবাস করে, স্বাধীনতার আগে ও পরে সরকারি উদ্যোগে এখানে কোনো উন্নয়ন হয়নি।
“এ এলাকা থেকে অন্যত্র যেতে হলে কোনো যানবাহনের প্রয়োজন পড়ে না। কারণ রাস্তা-ঘাট না থাকায় হেঁটে প্রথমে কড্ডা বাজার অথবা কোণাবাড়ি যেতে হয়।”
তিনি জানান, এ এলকার অনেক শিশু শিক্ষার্থী আছে যারা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে পার্শ্ববর্তী বাঘিয়া, কোণাবাড়ি অথবা অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে যায়।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, এলাকায় মানুষের চলাচলের মতো তিনটি সরকারি রাস্তা থাকলেও বিগত দিনে এগুলোতে এক কোদাল মাটিও পড়েনি।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্বাস উদ্দিন খোকন বলেন, “সিটি কর্পোরেশন থেকে ১৭ লাখ টাকার একটি রাস্তার অনুমোদন করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য এই রাস্তায় সামান্য কিছু মাটি ফেলার পর আর কাজ এগোয়নি।”
আব্বাস উদ্দিন বলেন, বাইমাইল নদীরপাড় সত্যিই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের একটি অবহেলিত এলাকা। বিগত সময় থেকে এখানে রাস্তা-ঘাট না থাকায় যানবাহন দিয়ে মানুষের চলাচলের জন্য কোনো সুযোগ নেই।
“ওই এলাকায় মাটি ফেলে একটি রাস্তার কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় ইটভাটার মালিকপক্ষের বাধার কারণে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।”
বাইমাইল নদীরপাড় গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান মিয়া বলেন, এলাকাটি সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলেও এখানকার অভিশাপ হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা। এক সময় এলাকাটি কৃষি নির্ভর ছিল। বর্তমানে এখানে কোনো ফসল হয় না। নদীর পানি কালো বিষাক্ত, নদী থেকে মাছ ধরা তো দূরের কথা পানিতে জীবের কোনো অস্তিস্তই নেই। এখানকার মানুষের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে শ্রম বিক্রি করা ছাড়া কোনো জীবিকা নেই।