দিনটি পালন উপলক্ষে বুধবার হাসামদিয়া শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বক্তারা ১৯৭১ সালে হাসামদিয়ায় পাক হানাদারদের হামলায় নিহতদেরকে শহীদের মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান।
১৯৭১ সালের ১৬ মে বোয়ালমারী উপজেলার হাসামদিয়ায় ৩৩ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয় এবং হাসামদিয়া বাজারসহ গ্রামের শতাধিক বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
শাহ খুররম রুহুল কুমারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
রব বলেন, এই দেশে যখন যে ক্ষমতায় আসে তখন সে তার মতো করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তৈরি করে। একদিন দেশে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখা হবে। সেদিন অনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে।
সরকার উন্নয়নের নামে দেশকে বিদেশিদের কাছে ঋণগ্রস্ত করছে এবং দেশের প্রত্যেক নাগরিক লাখ লাখ টাকার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উন্নায়ন আর গণতন্ত্রকে এক করা যাবে না উল্লেখ করে রব বলেন, “দেশে আজ বিরোধী শিবিরের লোকজন কথা বলতে পারে না। এটা কোনোভাবেই গণতন্ত্র হতে পারে না।”
পৃথিবীর অনেক স্বৈরশাসকের পতন বাজেভাবে হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখনও সময় আছে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন।
তিনি বর্তমান সরকারকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণেরও পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠান শেষে শহীদ পরিবারের মাঝে বস্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখা বই তুলেন দেন অতিথিরা।
সভায় বক্তরা এই গণহত্যায় শহীদ পরিবারের সদস্যসহ দেশের সকল গণহত্যায় নিহতের শহীদের মর্যাদা দেওয়ার আহবান জানান।
শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি
স্বাধীনতা ৪৭ বছর পরও সেখানে সরকারি উদ্যোগে কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। স্বীকৃতি পায়নি শহীদ পরিবারগুলো।
ফরিদপুরের তৎকালীন মুজিব বাহিনীর কমান্ডার সাবেক এমপি শাহ মো. আবু জাফর বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ মে ভোরে যশোর সেনানিবাস থেকে মেজর নেওয়াজের নেতৃত্বে তিন শতাধিক পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ঢুকে পড়ে হাসামদিয়া গ্রামে। সেইদিন আমাকে হত্যা করতে এসে না পেয়ে তারা কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে গ্রামে প্রবেশ করে। শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা, অগ্নি সংযোগ, লুটপাট, নারী ধর্ষণ।
আবু জাফর বলেন, এই গণহত্যায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা আজও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি পায়নি। আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে দিবসটি পালন করলেও সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না।
“বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকাবস্থায় তিনি দুই হাজার করে টাকা দিয়েছিলেন, তার মৃত্যুর পর আর কেউ খোঁজ নেয়নি এদের।”