বজ্রপাতে প্রাণ গেল আরও ১০ জনের

বজ্রপাতে দেশের বিভিন্ন জেলায় গত দুদিনের ধারাবাহিকতায় আরও দশ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ছয়জন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2018, 09:36 AM
Updated : 1 May 2018, 01:20 PM

মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ, গাইবান্ধা, সিলেট, বগুড়া ও শেরপুর জেলা থেকে এসব হতাহতের খবর পাওয়া যায়। নিহতদের অধিকাংশ ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতের শিকার হন।

এদের মধ্যে রয়েছেন সুনামগঞ্জে চারজন, গাইবান্ধায় দুইজন, সিলেটে দুইজন এবং বগুড়া ও শেরপুরে একজন করে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে গত রোববার ১৯ জন এবং সোমবার ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সুনামগঞ্জে মারা গেছেন ৪ জন

নিহতরা হলেন সদরের মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ (৪৫), জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের খোজারগাঁও গ্রামের কমলাকান্ত তালুকদার (৬০), বিমখালি ইউনিয়নের কলকতা গ্রামের হিরণ মিয়া (৩৫), বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের মেরুয়াখলা গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে আলম মিয়া (৫০)।

সদর থানার ওসি মো. শহিদুল্লা বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ দুপুরে বাড়ির পাশে কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম আল ইমরান বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে কমলাকান্ত তালুকদার তার দুই ছেলে প্রিন্স (২০) ও সৈকতকে (১৪) নিয়ে গ্রামের পাশে হাওরে কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই কমলাকান্ত মারা যান। আহত হন তার দুই ছেলে।

আহত দুই ভাইকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ উপজেলার বিমখালি ইউনিয়নের কলকতা গ্রামের হিরণ মিয়া নামের আরও একজন বজ্রপাতে মারা যান বলে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।

স্বজনদের বরাত দিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, হিরণ মিয়া বাড়ির পাশে কাজ করার সময় বজ্রপাত হয়। হাসপাতালে আনার পথে তার মৃত্যু হয়।

বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি মোল্লা মনির হোসেন জানান, উপজেলার খরচার হাওরে বোরো ধান কাটতে গিয়েছিলেন আলম মিয়া (৫০)। বেলা ১২টার দিকে বৃষ্টির সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

গাইবান্ধায় মারা গেছেন মা-ছেলে

বগুড়ার সোনাতলা থানার ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কামারপাড়া গামে বাড়ির পাশে বিলে ধান কাটতে গিয়েছিলেন আবদুস সালামের স্ত্রী বিলকিস বেগম (৪০) ও ছেলে সোহেল মিয়া (১৬)। সকাল ৮টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ বজ্রপাতে তারা ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এছাড়া এ দুর্ঘটনায় আবদুস সালাম, তাদের আরেক ছেলে আবু তারেক (১৮) ও গোলজার রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জুমারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রোস্তম আলী আকন্দ জানিয়েছেন।

আহতদের সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

সিলেটে ২ কিশোর

কানাইঘাট থানার ওসি আবদুল আহাদ জানান, বিকাল ৩টার দিকে বাড়ির পাশে মাঠে খেলতে গিয়ে তারা বজ্রপাতের শিকার হয়।

নিহতরা হলো - কানাইঘাট উপজেলার উপরবড়াই গ্রামের করিম আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ (১২) ও ফখরুল ইসলামের ছেলে সালমান আহমেদ (১৩)।

শেরপুরে কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু

শেরপুর সদর উপজেলার বউলি বিলে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে এক কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে ধলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রহিজ উদ্দিন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ১২ জন কৃষি শ্রমিক ধান কাটছিলেন। বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই হোসাইন মিয়া ওরফে লাল চান (২৮) মারা যান। তিনি চান্দেরনগর চক্কারপাড়া গ্রামের ছমির উদ্দিনের ছেলে। এ দুর্ঘটনায় আহত চান্দেরনগর গ্রামের রশীদ মিয়ার ছেলে রহুল আমীনকে (২৬) শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

বগুড়ায় ১ জন

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই মিজানুর রহমান, মেঘাখাদবো গ্রামের তবিবর শেখের ছেলে তমিজুর রহমান (৪৭) সকাল ৮টার দিকে বাড়ির পাশে শিমক্ষেতে কাজ করছিলেন। বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।