গাজীপুর নির্বাচন: ভোটারদের ডেকে প্রার্থীদের ‘প্রতিশ্রুতি’

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোটারদের তাদের বাসায় ডেকে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আবুল হোসেন গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2018, 06:14 PM
Updated : 17 April 2018, 06:15 PM

তফসিল ঘোষণার পরই উভয় দলের প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্ধারিত সময়ের আগেই এলাকায় প্রকাশ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা পক্ষে মিছিল, লিফলেট ও পোস্টার-ব্যানার টানিয়ে অনানুষ্ঠাণিকভাবে নির্বাচনী গণসংযোগ ও শোডাউন শুরু করেন।

এতে সমালোচনার মুখে পড়েন রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এরপর নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলে প্রার্থীরা নিজ নিজ বাসায় মতবিনিময় সভার নামে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেন। 

আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের নির্বাচনী মিডিয়া সেলের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আলম জানান, জাহাঙ্গীর আলম সিটি কর্পোরেশনের ছয়দানা এলাকায় নিজ বাসায় মঙ্গলবার জেলার ইমাম সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইমাম বলেন, এ সময় তিনি এলাকার মানুষ ও ইমামদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ভোট প্রার্থনা করেছেন। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন পরামর্শ ও নির্বাচনের কৌশল নিয়েও আলোচনা করেন।

সভায় বাংলাদেশ ইমাম সমিতি গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান মাহমুদী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলী হায়দার গাজীপুরী সাধারণ সম্পাদক মো. হারিছুল হোসাইনী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বাসায় ডেকে নিয়ে পর্যায়ক্রমে এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক নির্বাচনী পরিচালনা কমিটিও গঠন করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।  

বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার তার টঙ্গীর বাসভবনে মঙ্গলবার সকালে পেশাজীবী পরিষদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

এ সময় পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, ড. মো. সাইফুল আলম, সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক আসাদুজ্জামান আকাশ, অ্যাডভোকেট নূরুল কবির শরিফসহ বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। এরপর একই স্থানে নির্বাচনী প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে গাজীপুর বাসন, কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর ইউনিয়ন এলাকার দলীয় কর্মীরা অংশ নেন।

এ সময় গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক মো. সোহরাব উদ্দিন, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বসির আহমেদ বাচ্চু, জেলা বিএনপির সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক কাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন সরকার, সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুর-এর সভাপতি দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. ইস্তাফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থী প্রকাশ্যে গণসংযোগ, মিছিলও সভা করতে পারবে না এবং ব্যানার-পোস্টার লাগানো যাবে না। তবে বাসায় উঠোন বৈঠক করার বিধান থাকলেও তার জন্য পুলিশের পূর্বানুমতি প্রয়োজন হবে।

টঙ্গী থানার ওসি মো. কামাল হোসেন ও জয়দেবপুর থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত উঠোন বৈঠক করার জন্য কেউ তাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়নি। 

নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ২৩ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও ২৪ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দের দিন। ১৫ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ১১২ জন।