সরকারি চাকরিতে প্রচলিত কোটার সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল।
Published : 09 Apr 2018, 08:40 PM
তিনি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ‘অক্ষুণ্ন রাখতেই’ কোটা সংস্কার করে একটি ‘যৌক্তিক মাত্রায়’ নিয়ে আসা দরকার।
সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে সোমবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাফর ইকবাল এ কথা বলেন।
বর্তমানে দেশে পাঁচ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য। প্রতিবন্ধীর জন্য এক শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা ১০ শতাংশ করে। সব মিলিয়ে কোটার জন্য বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ।
ফলে এর কোনো শ্রেণিতে যারা পড়েন না, তাদের প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে বাকি ৪৪ শতাংশের জন্য।
জাফর ইকবাল বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কোটা প্রচলিত রয়েছে। কোনো পার্টিকুলার গ্রুপ যদি পিছিয়ে পড়া থাকে, অবহেলিত থাকে তবে সেই গোষ্ঠীকে সামনে নিয়ে আসার জন্য কোটার প্রচলন করা হয়। তবে তা অবশ্যই নিয়মের মধ্যে হতে হবে।
“কোটার পরিমাণ সামঞ্জস্যপূর্ণ, যুক্তিপূর্ণ, লজিক্যাল এবং দেশের স্বার্থের সঙ্গে ডিপেনডেন্ট হতে হবে। কিন্তু যদি মনে হয় এর পরিমাণ বেশি হয়ে গেছে তবে সেটা পরিবর্তন করা দরকার।”
“দেশের মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের এত ভালোবাসে, এত সম্মান করে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা যদি একটা রিজনেবল পর্যায়ে থাকত তাহলে মুক্তিযোদ্ধারা এত অসম্মানিত হতেন না।”
মুক্তিযোদ্ধা কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা ও আদিবাসী কোটা ছাড়া অন্য যেসব কোটা রয়েছে সেসব কোটার পক্ষে নন বলেও জানান জাফর ইকবাল।
তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা ও আদিবাসী কোটার সংখ্যা খুবই কম। এগুলো ছাড়া অন্য যেসব কোটা রয়েছে সেসব কোটার পক্ষের মানুষ আমি না। তবে আমি একা বললে তো হবে না। এটা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিবে।”
কোটা যত কম ততই ভালো মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমাদের দেশের কোটার মতো অন্য কোথাও এত সংখ্যক কোটা নেই। এর পরিমাণ কমিয়ে নেওয়া উচিত।”
আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে কথা বলছে না। তারা সংস্কার চাইছে। পৃথিবীর সকল দেশেই প্রতিনিয়ত সংস্কার হয়। বাংলাদেশেরও কোটা সংস্কার দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর ব্যানারে সারা দেশে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।