শুক্রবার সন্ধ্যার এ শিলাবৃষ্টিতে কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের ১১০০ একর জমির তরমুজ ও বাঙ্গি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার কৃষকের তরমুজ ও বাঙ্গি মূল অর্থকরী ফসল।
এ বছর ৮৫০ একর জমিতে তরমুজ ও ২৫০ একর জমিতে বাঙ্গির আবাদ করা হয়েছিল বলে উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে।
মাত্র ক্ষেত থেকে কৃষক বাঙ্গি বিক্রি শুরু করেছেন। কয়েক দিন পরেই তরমুজ তুলবেন। কিন্তু হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে এ ফসল নষ্ট হওয়ায় মুখে অন্ধকার দেখছেন তারা।
ব্যাংক, এনজিও, দাদন ব্যবসায়ী ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তরমুজ ও বাঙ্গির আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। ফলনও হয়েছিলাভালো। শিলাবৃষ্টি সে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঋণ টাকা পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
বাঙ্গি ও তরমুজ ক্ষেত রক্ষায় কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কলাবাড়ী ইউনিয়নে অবস্থান করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
“গত বছর বৃষ্টি ও বানের পানিতে ফসল ভেসে গেছে। এ বছর শিলা বৃষ্টিতে বাঙ্গির ক্ষেত বিরান হয়েছে।”
নলুয়া গ্রামের মিলন বাড়ৈ বলেন, ব্যাংক, এনজিও, দদান ব্যবসায়ী ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ এনে বাঙ্গি-তরমুজের চাষ করেছিলাম। ক্ষেতের বাঙ্গি বিক্রি শুরু করেছি। তরমুজ আগামী সাত দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে তোলা যাবে। এ অবস্থায় শিলাবৃষ্টি ক্ষেত ধ্বংস করে দিয়েছে।
“ক্ষেতের বাঙ্গি-তরমুজ বেচে খরচের টাকা উঠবে না। লোকসান গুনতে হবে। ঋণের টাকা কী ভাবে পরিশোধ করব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।”
তেঁতুলবাড়ী গ্রামের কৃষক প্রশান্ত হালদার বলেন, “৪ একর জমিতে বাঙ্গি তরমুজের চাষ করেছিলাম। শিলের আঘাতে বাঙ্গির ক্ষেত ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে। বাঙ্গি গাছ ঢলে পড়েছে। উঠতি তরমুজও ফেঁটে গেছে। এখন চোখের সামনে ক্ষেতের মধ্যে এ সব তরমুজ পচে যাবে।”
শিলার আঘাতে বাঙ্গি-তরমুজ ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রথীন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, শিলাবৃষ্টির পর কৃষি বিভাগের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তারা কলাবাড়ী ইউনিয়নে অবস্থান করে বাঙ্গি ও তরমুজ রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। পরে তাদের ঋণ মওকুফ করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে বলে জানান তিনি।