সদর উপজেলার গাইটাল এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে এই পাগলা মসজিদের ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরের পুরনো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ওই মসজিদ ঘন ঘন সংবাদ শিরোনামে আসছে ভক্তদের দানের টাকার জন্য।
গত বছর ২৬ অগাস্ট পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এক কোটি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এরপর গত ৬ জানুয়ারিতে পাওয়া যায় এক কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা। ডলার, পাউন্ড, সৌদি রিয়াল আর বেশ কিছু স্বর্ণালংকারও ছিল।
তার ৮৪ দিনের মাথায় শনিবার বিকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আলমগীর হুছাইনের উপস্থিতিতে পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলা খোলা হয়।
আলমগীর হুছাইন বলেন, ৮৪ লাখ ৯২ হাজার টাকার পাশাপাশি বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার এবং বিদেশি মুদ্রা এবারও পাওয়া গেছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো.সাঈদ বলেন, গণনা শেষে টাকাগুলো রূপালি ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। আর স্বর্ণালঙ্কারগুলো আগে পাওয়া স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে একটি সিন্দুকে রাখা হয়েছে। সেগুলোর পরিমাণ ও দাম এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে আনুমানিক চার একর জমির ওপর পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠা নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কাহিনী প্রচলিত আছে। তিনতলা ও তিন গম্বুজের এ মসজিদের উঁচু মিনার দূর থেকেও নজরে আসে।
সেসব কাহিনীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এবং ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে প্রতিদিনই বহু মানুষ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ মসজিদে আসছেন। তাদের দানের টাকাই জমা হচ্ছে আটটি দানবাক্সে।
সাধারণত মাস তিনেক পর পর প্রশাসনের কর্মকর্তা ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতে বাক্সগুলো খুলে টাকা গুনে ব্যাংকে জমা করা হয়।
টাকা বা গয়নার পাশাপাশি অনেক গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগিও অনেকে দান হিসেবে দেন। সপ্তাহে এক দিন সেগুলো নিলামে বিক্রি করা হয়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য সাইফুল হক মোল্লা দুলু বলেন, দানবাক্সে পাওয়া অর্থ দিয়ে মসজিদ ও কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত এতিমখানা, মাদ্রাসা, কবরস্থানের ব্যায় নির্বাহ হয়। এছাড়া জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা এবং দুঃস্থদের সহায়তা করা হয়।