জামালপুরে মন্দিরের জমি অধিগ্রহণ করে সাংস্কৃতিক পল্লী

জামালপুরে তিন শতাধিক বছরের পুরনো দুটি মন্দিরের জমি অধিগ্রহণ করে নির্মাণ করা হচ্ছে জেলার সাংস্কৃতিক পল্লী (কালচালার ভিলেজ)।

জামালপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2018, 12:25 PM
Updated : 31 March 2018, 12:31 PM

শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রাচীন দয়াময়ী মন্দির ও রাধামোহন জিউ মন্দিরের ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্তে সনাতন সম্প্রদায়ের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

অধিগ্রহণ করা ওই জমিতে মন্দিরের বাণিজ্যিক ভবন ও পুরোহিত-কর্মচারীদের বাসস্থান রয়েছে।

কালচারাল ভিলেজ প্রকল্পের জন্য বিকল্প জায়গা থাকার পরেও মন্দিরের ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অভিযোগ তাদের।

দয়াময়ী মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ শংকর রায় জানান, শহরের জিরো পয়েন্টে ১১০৪ বঙ্গাব্দে (খ্রিস্টীয় ১৭ শতকে) বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব মুর্শিদকুলী খাঁর সময় কৃষ্ণ রায় চৌধুরী দয়াময়ী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দিরের নামে গড়ে উঠেছে দয়াময়ী পাড়া। এই মন্দিরের পাশেই রয়েছে প্রাচীন রাধামোহন জিউ মন্দির।

তিনি বলেন, মন্দির দুটির পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে জামালপুর কালচারাল ভিলেজ। ভিলেজের সৌন্দর্যবর্ধন কাজে ব্যবহার করতে দেবোত্তর সম্পত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত দয়াময়ী মন্দিরের সাড়ে ৮ শতাংশ এবং রাধামোহন জিউ মন্দিরের ৫ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

মন্দিরের ওই ভূমির উপর বাণিজ্যিক ভবন ও মন্দিরের পুরোহিত কর্মচারীদের বাসস্থান রয়েছে বলে জানান শংকর রায়।

৩২০ বছরের পুরনো মন্দিরকে ধ্বংস এবং এর ভূমি ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহারের জন্য অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

সেইসঙ্গে মন্দির রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

মন্দির কমিটির দপ্তর সম্পাদক অপু দত্ত বলেন, “কালচারাল ভিলেজ প্রকল্পের উন্নয়ন কাজের জন্য বিকল্প জায়গা থাকার পরেও মন্দিরের ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত রহস্যজনক।”

মন্দির কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী সুবির বসাক বলেন, মন্দিরের ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে একদিকে মন্দির দুটি নিরাপত্তাহীন হবে; অপরদিকে মন্দির মার্কেটের দুই শতাধিক কর্মচারী ও ব্যবসায়ী কর্মহীন হবে।

দয়াময়ী মন্দির ও রাধামোহন জিউ মন্দির পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি অজিত কুমার সোম বলেন, মন্দিরের দেবোত্তর ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে তারা আন্দোলনে যাবেন।

মন্দির রক্ষায় রোববার সকাল ১০টায় শহরের দয়াময়ী চত্বরে মানববন্ধন এবং বেলা সাড়ে ১১টায় মন্দিরে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ শংকর রায়।

এ বিষয়ে জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির বলেন, সাংস্কৃতিক পল্লী (কালচারাল ভিলেজ) নির্মাণের জন্য এলজিইডির প্রস্তাবে জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটি ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ওই জমিতে মন্দিরের সামনের কিছু অংশ পড়লেও মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে দাবি করেন তিনি।