হলি আর্টিজানে হামলার ‘অনেক আগে’ বাড়ি ছাড়েন সাগর

হলি আর্টিজানে হামলার অন্তত এক যুগ আগে হাদিসুর রহমান সাগর বাড়ি ছেড়েছিলেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

মোমেন মুনি জয়পুরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2018, 12:36 PM
Updated : 23 March 2018, 05:18 PM

বুধবার রাত দেড়টার দিকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক থেকে সাগর (৩৫) ও নিলয়কে (২৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা অন্য কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে কিচক বাজারে অবস্থান করছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

দুই বছর আগে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন নিহত হয়েছিলেন। নজিরবিহীন ওই জঙ্গি হামলায় সাগরকে অস্ত্র জোগানদাতা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল পুলিশ।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার পলিকাদোয়া কয়রাপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধী পল্লি চিকিৎসক হারুনুর রশিদ ও মা আছিয়া খাতুনের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সাগর দ্বিতীয়। গ্রামের মাদ্রাসায় দাখিল পাস করেন তিনি।

সাগরের মা গ্রামে একটা ছোট মুদির দোকান চালান; আর বাবা উপজেলার কাদোয় মোড়ে একটা ওষুধের দোকান করেন।

আছিয়া খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০০১ সালে দাখিল পাশ করেন সাগর। আলিম ফেল করার পর বাড়িতে থাকতেন। অভাবের সংসারে টানাপোড়েন লেগে থাকত। এর ২/৩ বছর পর মায়ের সঙ্গে রাগ করে বাড়ি ছাড়েন। এরপর তাকে অনেক খুঁজেছেন তারা।

বাড়ি ছাড়ার পর ২০১৪ সালে স্ত্রীকে নিয়ে একবার বাড়ি এসেছিলেন বলে তার মা জানিয়ছেন।

তিনি জানান, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি থানায় জিডি করেছিলেন; কিন্তু পুলিশ কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।  ২০১৬ সালে পুলিশ সাগরের বাবাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

“তবে মাঝে মধ্যে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের বাড়ি আসত এবং বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলত। কেউ কেউ টাকা-পয়সাও দাবি করত।”

আছিয়া বলেন, বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর ঢাকায় একটা কোম্পানিতে চাকরি করে বলে পরিবারকে জানিয়েছিলেন। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসতেন; কিন্তু বাবা-মাকে টাকা-পয়সা দিতেন না। এক পর্যায়ে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন। 

“অনেকদিন আগে ২০১৪ সালের দিকে একবার বউকে নিয়ে সাগর বাড়ি এসেছিল সাগর। তারপর কোথায় থাকত, কী করত কিছুই জানা ছিল না।”

সাগরের চাচি কবিতা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সাগর জেএমবি হতে পারেন তা তারা ভাবতেও পারেননি।

প্রতিবেশী ইসতামুল, আব্দুস সবুরসহ কয়েকজন জানান, হাদিসুর শান্ত স্বভাবের এবং নিয়মিত নামাজ পড়তেন। তিনি জেএমবি এটা তাদের জানা ছিল না। সংবাদ মাধ্যমে তার জেএমবি হওয়া এবং পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার কথা জানতে পারেন তারা।