লক্ষ্মীপুরের ২০ কিলোমিটার সড়কে সংস্কারের ভোগান্তি

চার মাস ধরে লক্ষ্মীপুর-রায়পুর মহাসড়ক সংস্কারের কাজ চলায় খোঁড়াখঁড়ি আর ধুলোবালির যন্ত্রণায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2018, 03:29 AM
Updated : 23 March 2018, 03:29 AM

লক্ষ্মীপুর থেকে রায়পুরের সীমানা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং তুলে ফেলায় ধুলার আন্তরণে ঢাকা পড়েছে সড়কের আশপাশের ভবন, দোকানপাট ও গাছপালা। বড় গাড়িগুলো চলছে জানালা দরজা বন্ধ করে।

ধুলা কমাতে প্রতিদিন পানি ছিটানোর কথা থাকলেও দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তা করছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সদস্য মামুন জানান, রাস্তার এই অবস্থায় সড়কে দুর্ঘটনাও বাড়ছে। ধুলার কারণে পথচারী আর যাত্রীদের চলাচল করতে হয় নাক-মুখ চেপে। অনেকের শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশি দেখা দিচ্ছে।

“সড়কে পানি না দিয়ে ঠিকাদার নিজের ইচ্ছে মত কাজ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।”

দালাল বাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, “চার মাস ধরে আমরা ঘরে থাকতে পারছি না। ভাত খাওয়ার সময় প্লেটে বালি, তরকারিতে বালি…। বাচ্চাদের অসুখ-বিসুখ হচ্ছে।”

দালাল বাজার ফাতেমা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী তাহমিনা নাসরিন বলেন, “প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের সময় জামাকাপড় ধুলায় নষ্ট হয়ে যায়। মুখে মাস্ক ব্যাবহার না করলে শ্বাস নেওয়া যায় না।”

রায়পুর রুস্তম আলী কলেজের প্রভাষক তমালিকা কর্মকার বলেন, “এখন ৩০ মিনিটের পথ পার হতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা লাগে। তার ওপর ধুলাবালি তো আছেই। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা, আমি চিন্তিত শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমত পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারবে কিনা। রাস্তার কাজ যেভাবে চলছেম তাতে কত দিনে শেষ হবে আমাদের সন্দেহ আছে।”

রায়পুরের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন অভিযোগ করেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের যথাযথ তদারকি না থাকায় ঠিকাদার নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছে।

“কিছুদূর পর পর সড়কের এক লেইন বন্ধ রেখে অন্য লেইন দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় রায়পুর থেকে লক্ষ্মীপুর পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টার মত লেগে যাচ্ছে।”

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, লক্ষ্মীপুর থেকে রায়পুরের সীমা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ করছে কুমিল্লার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স। এ কাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৩ কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার ৫৭ টাকা।

“মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ঠিকাদারকে নিয়মিত পানি দিতে বলা হয়েছে। এ সড়কের কাজে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।”

তবে আগামী এক মাসে ধুলার সমস্যার সমাধান হওয়ার কোনো আশা দিতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ঠিকাদার আজিজুর কবির বাচ্চু বলেন, পানির লরির সংকট থাকায় তারা পানি দিচ্ছেন কম।

“সড়কের দুই পাশে সম্প্রসারণের জন্য মাটি রাখায় ধুলা একটু বেশি হচ্ছে। সড়কের গাছ কাটাসহ বিভিন্ন কারণে কাজেও কিছুটা ধীরগতি আছে। তবে ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। মেয়াদের আগেই কাজ শেষ হবে।”